পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া নয় প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ চারজনের দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদক থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কমিশনের সূত্র নিশ্চিত করেছে।
শেখ হাসিনা ছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান হবে, তারা হলেন হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক।
এ ব্যাপারে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্প, বেজা ও বেপজার আটটি প্রকল্প বাস্তবায়নের আড়ালে ২১ হাজার কোটি টাকা লোপাট/আত্মসাত করেছেন, এমন অভিযোগে গত ১৪ অক্টোবর দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, যেখানে বর্ণিত অভিযোগসমূহ কমিশন হতে অনুসন্ধানের নিমিত্ত মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) বরাবর প্রেরণের জন্য দুদক কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এছাড়া রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা লোপাট/আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে ববি হাজ্জাজের দাখিলকৃত অভিযোগ ও বিভিন্ন পত্রিকার ক্লিপিংয়ে বর্ণিত অভিযোগসমূহ কমিশন হতে অনুসন্ধানের নিমিত্ত মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) বরাবর প্রেরণের জন্য দুদক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে তথ্য প্রকাশ করে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামের একটি ওয়েবসাইট।
ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ আত্মসাতের কাজে তাকে সহায়তা করেছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিক। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটমের কাছ থেকে একটি পারমাণবিক চুল্লি কেনার নামে এই বিশাল অর্থ লেনদেন করেন।
তবে ২৫ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল, এমন খবরকে ‘গুজব’ ও ‘মিথ্যা’ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি।
গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হলে তা নিয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে রিট করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার ববি হাজ্জাজ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রুল জারি করেন।