দেশের নানাপ্রান্তে বিভিন্ন দাবিতে চলছে নানামুখী সংস্কারের আন্দোলন। সেই তালিকায় যোগ দিলেন এবার দেশের বিজ্ঞাপন নির্মাতা-প্রযোজকরা। ৪ দফা দাবিতে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং ক্লায়েন্টদের বিরুদ্ধে এক অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছেন তারা।
১ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাডফিল্ম অ্যান্ড কনটেন্ট প্রডিউসারস (বিএএসিপি)। এই কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছে বিজ্ঞাপনচিত্র শিল্পের ১১ সংস্থাও। দেশের সংস্কারের পাশাপাশি এই মুহূর্তে শিল্পাঙ্গনকেও সংস্কার করা প্রয়োজন এবং এটাই উপযুক্ত সময় বলে দাবি করছেন তারা। নিজেদের অধিকার সুরক্ষায় দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে বলে জানান এইসব সংস্থা-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
তাদের উত্থাপিত চারটি দাবি হলো- পূর্ববর্তী বকেয়া নিষ্পত্তি, সময়ানুযায়ী কাজের আদেশ, যে কোনো কাজের আগে ৭৫ ভাগ অর্থ অগ্রিম প্রদান এবং বাকি ২৫ ভাগ বিল তৈরির ৪৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করা।
প্রযোজকদের সংস্থা বিএএসিপি’র সভাপতি হাবিবুর রহমান তারেক বলেন, ‘সবার স্বার্থ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। এই ইন্ডাস্ট্রিটাতে কাজের একটা সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হওয়া জরুরি। এলোমেলোভাবে যা হচ্ছে তা মেনে নেয়ার মতো নয়। বিজ্ঞাপনী সংস্থা, এজেন্সি এবং ক্লায়েন্টদের বহুবার জানানোর পরেও এর কোনো সমাধান হচ্ছিলো সমস্যাগুলো। বাধ্য হয়ে আমাদের এই পন্থায় নামতে হয়েছে। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো এখনো সেই পঞ্চাশ বছর আগের নিয়মেই চলছে। অনেক বলার পরেও তারা কোনো ভ্রুক্ষেপ করছেন না। একটা সঠিক ওয়ার্ক অর্ডার নেই, পেমেন্ট, বিলিং নিয়ে ঝামেলা। কোনো কিছুই নিয়মতান্ত্রিকভাবে হচ্ছে না। যেগুলোর জন্য অনেক নির্মাতা কিংবা প্রযোজকদের ভুগতে হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না।’
বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং ক্লায়েন্টদের ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে চারটি দাবির ব্যাপারে। যারা এগুলো মানবেন না তাদের সঙ্গে বিজ্ঞাপন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কেউই কাজ করবে না বলেও জানান হাবিবুর রহমান তারেক।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাডফিল্ম অ্যান্ড কনটেন্ট প্রডিউসারস (বিএএসিপি)-এর দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সমর্থন জানিয়েছে অন্য সংস্থাগুলোও। এরমধ্যে রয়েছে অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড ফিল্ম মেকারস অ্যাসোসিয়েশন (এডিএফএ), বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স অব সিনেমাটোগ্রাফারস (বিএসি), পোস্ট প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পিএবি), আর্ট ডিরেক্টরস অ্যান্ড কস্টিউম ডিজাইনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বিএএএমএস। এছাড়াও তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে মেকআপ, প্রোডাকশন ম্যানেজার, লাইট, ক্যামেরা, কাস্টিং পরিচালক এবং সেট নির্মাতারাও।