ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছেন কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার পর সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু হয়, যা চার ঘণ্টা পরও চলছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় সরেজমিনে সায়েন্সল্যাব মোড়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধে সড়কে যান চলাচল বন্ধ। তবে জরুরি রোগী পরিবহনে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ঢাকা কলেজে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর টিমের ফোকাল পার্সন আব্দুর রহমান বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। কিন্তু সরকার আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সাড়া দিচ্ছে না। দাবি মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। আমরা রাজপথে নেমেছি দাবি আদায়ের জন্যই। সরকারের প্রতি আহ্বান, দ্রুত আমাদের দাবি মেনে নিন।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাবি না মানলে আগামীকালও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধের ঘোষণা আসতে পারে। আজকের কর্মসূচি শেষেই সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী এই ঘোষণা দেওয়া হবে।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের সমস্যার চিত্র তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এরপর একই দাবি জানিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ও ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। একই স্মারকলিপি কলেজগুলোর অধ্যক্ষদেরও দেওয়া হয়।
এরপর গত ২২ অক্টোবর সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সেদিন অবরোধ কর্মসূচি চলে। বিকেলে সায়েন্সল্যাব মোড়ে কর্মসূচি থেকে ৩ দফা দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সেদিনের মতো কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিকে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের তিনদফা দাবি হলো:
১. অবিলম্বে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করতে হবে।
২. এই কমিশন বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে ৩০ দিনের মধ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করবেন।
৩. স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কোনো সেশনজট তৈরি হতে পারবে না। যতদিন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন না হবে ততদিন সেশনজট যেন না হয় সেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে।