সিঙ্গাপুরের একটি বহুতল ভবনের জানালার বাইরে আটকে থাকা ৩ বছর বয়সি এক শিশুর প্রাণ বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন জহির নামের এক বাংলাদেশি যুবক। এই বীরত্বের জন্য তাকে পুরস্কৃতও করা হয়েছে।
সহকর্মী সা থু ইয়া অংয়ের সাথে পুরস্কার হাতে বাংলাদেশি যুবক জহির
৩৪ বছর বয়সি প্রবাসী জহির সিঙ্গাপুরে লরি চালান। গত ১৭ বছর ধরে এই কাজ করছেন তিনি।
রোববার (২০ অক্টোবর) ছুটির দিন দুপুরের খাবার কিনতে সাইকেলে করে দোকানে রওয়ানা হন যান জহির। কাছেই হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (এইচডিবি) ব্লকে প্রবেশ করতেই সেখানে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করেন তিনি।
জহির দেখতে পান, একটি ভবনের তিনতলায় জানালার বাইরে দেয়ালের পাশে একটা শিশু দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো মুহূর্তে নিচে পড়ে যেতে পারে শিশুটি। আর পড়লেই নির্ঘাত মৃত্যু।
পরিস্থিতি দেখে জহির দৌড়ে চলে যান ওই ভবনের তিনতলার সেই ফ্ল্যাটের মেইন দরজায়। ডোরবেল বাজান, দরজায় ধাক্কা দেন। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই। ফলে নিচে নেমে আসেন জহির।
এমন সময় ঘটনাস্থলে হাজির হন তার সহকর্মী সা থু ইয়া অং। মিয়ানমারের নাগরিক সা থুকে সাথে নিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার উদ্ধার করেন তিনি। এমন বীরোচিত কাজের জন্য প্রশংসার পাশাপাশি তাকে পুরস্কারও দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সিঙ্গাপুরের ইয়িশুনে এসসিডিএফ বিভাগের সদর দফতরে তাকে সিঙ্গাপুর সিভিল ডিফেন্স ফোর্স (এসসিডিএফ) কমিউনিটি লাইফসেভার পুরস্কার প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে তার আরও এক সহযোগী মিয়ানমারের এক নাগরিককেও পুরস্কার দেয়া হয়।
জহির বলেন, কোনো বিনিময়ের কথা ভাবিনি। এটা আমার নিজের সন্তানও হতে পারতো। আমি আমার ৭ বছর বয়সি ছেলের কথা ভেবে বাচ্চাটিকে বাঁচিয়েছি।
তবে এ পুরস্কার পেয়ে খুব সম্মানিত বোধ করছেন জহির। যেসব পরিবারে ছোট বাচ্চা আছে সেসব পরিবারকে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।