
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ফেলে যাওয়া ৭৮ জন বাংলাভাষীকে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রিভারাইন বর্ডার গার্ডের (আরবিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সৈয়দ আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে ৪ জন ভারতীয় নাগরিক, আর বাকি ৭৪ জন বাংলাদেশি। বেশিরভাগের বাড়ি বরিশাল, খুলনা ও নড়াইল জেলায়।
রোববার (১১ মে) দুপুর ২টার দিকে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা উদ্ধারকৃতদের স্থানীয় লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাত ১১টার দিকে তাদের সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আনা হয়। এর আগে শনিবার রাত ১১টার দিকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্প থেকে তাদের হস্তান্তর করা হয় কাকা-দোবেকী কোস্টগার্ড ক্যাম্পে।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মশিউর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ক্যাম্প থেকে আমাকে জানানো হয়, উদ্ধারের পর বেশিরভাগ মানুষ কয়েক দিন না খেয়ে থাকায় শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পরে দ্রুত স্যালাইন, পানি ও শুকনো খাবার নিয়ে আমরা পৌঁছাই। গিয়ে দেখি, অধিকাংশই দুর্বল, তবে নির্যাতনের কোনো দৃশ্যমান আলামত পাওয়া যায়নি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে কোস্টগার্ড থানায় হস্তান্তর করবে। এরপর তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলবে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জাগো নিউজকে জানান, এই ৭৮ জনকে রাতে থানায় আনা হতে পারে। তাদের জন্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কী কারণে তাদের বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে একাধিক নৌযানে করে ৭৮ জন বাংলাভাষী মানুষ রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা তাদের সুন্দরবনের নির্জন মান্দারবাড়িয়া চরে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। তারা অভিযোগ তোলে, এরা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।
এই ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় অনেকেই। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের আলোকে বিষয়টি তদন্ত ও কূটনৈতিকভাবে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে একাধিক বেসরকারি সংগঠন।