দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতা আতিশি। তিনি দিল্লির তৃতীয় নারী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। এর আগে কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিত ও বিজেপির সুষমা স্বরাজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আতিশির নাম প্রস্তাব করেন সদ্য পদত্যাগ করা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
শীলা দীক্ষিত সবচেয়ে দীর্ঘ সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৫ বছর এই পদে ছিলেন তিনি। অপর দিকে বিজেপি–সমর্থিত সুষমা স্বরাজ ১৯৯৮ সালে মাত্র ৫২ দিন মুখ্যমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরবর্তীকালে জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়া সুষমা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন।
এবার ৪৩ বছর বয়সী আতিশি দিল্লির সর্বকনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রীর খাতায় নাম লেখাতে যাচ্ছেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তিনি ভারতের দ্বিতীয় নারী মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
শীলা দীক্ষিত যখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৬০ বছর। সে তুলনায় সুষমা স্বরাজ বেশ কম বয়সেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৪৬ বছর।
বর্তমানে আতিশির কাছে দিল্লির সর্বোচ্চসংখ্যক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রয়েছে। তিনি অর্থ, পানি, শিক্ষা, পূর্ত, বিদ্যুৎ, রাজস্ব, পরিকল্পনা, পরিষেবা, আইনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালসহ অন্য জ্যেষ্ঠ নেতারা কারাগারে থাকাকালে আতিশি দল টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ সময় দলের অন্য নেতাদের নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
আম আদমি পার্টির বিধান সভা সদস্যদের বৈঠকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আতিশির নাম প্রস্তাব করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সবাই তাঁর এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। আজ সন্ধ্যায় উপরাজ্যপাল বিনয় কুমার সাকসেনার সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র দেন কেজরিওয়াল।
আম আদমি পার্টির নেতা গোপাল রায় বলেছেন, দলের একটি প্রতিনিধিদল বিনয় কুমার সাকসেনার সঙ্গে দেখা করে আতিশির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবেন।
শীলা দীক্ষিত দিল্লির রাজনীতির ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি শুধু দিল্লির ইতিহাসেই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকা নারী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
অপর দিকে বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা সুষমা স্বরাজ দিল্লির পঞ্চম নারী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি স্বল্প সময় এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে পদত্যাগ করার পর জাতীয় রাজনীতিতে মনোযোগ দেন তিনি।
ভারতের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য নারী মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের নবম মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। উত্তর প্রদেশের ১৮তম মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী। বিহারের ২১তম মুখ্যমন্ত্রী রাবরি দেবী এবং তামিলনাডুর পঞ্চম মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা।