সংস্কারের মাধ্যমে নতুন গঠনতন্ত্র চান অভিনয়শিল্পীরা। এ জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। এক মাসের মধ্যে সেসব গৃহীত না হলে বর্তমান কমিটিকে পদত্যাগ করতে হবে এবং সমন্বয়ক কমিটিকে সংগঠনের সবকিছু বুঝিতে দিতে হবে। সেই সঙ্গে শিল্পীসংঘের উপদেষ্টা পরষিদকেও পদত্যাগ করতে হবে।
আজ (১০ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার বিকেলে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে বাংলাদেশের সব পর্দার অভিনয়শিল্পীরা ‘কথা বলতে চাই, কথা শুনতে চাই’ শিরোনামে এক কর্মসূচি ডাক দিয়েছিলেন। সেখানে নিজেদের প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেন তারা।
সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ নেওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন অভিনয়শিল্পীরা। সংঘের কমিটি ভেঙে তারা নতুন নেতৃত্ব দেখতে চান। উপস্থাপিত প্রস্তাবগুলোও সেই ইঙ্গিত দেয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, অভিনয়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে পেশার স্বীকৃতি দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ, ২০২২-২৩-এর কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, নতুন রেজিস্ট্রেশন চালু করা, পেশাদারদের কার্ডের ব্যবস্থা করা যার মাধ্যমে তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানান সুবিধা পাবেন, সংস্কারের মাধ্যমে ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে, যে সদস্যরা রাজনীতিতে যুক্ত হবেন তাদের পোস্ট স্থগিত করা যাবে না নির্বাচনের সুযোগও দেওয়া হবে না, কোনো সদস্য কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে যে, সংগঠনের সব সদস্যদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইন্স্যুরেন্স, সাইবার নিরাপত্তা, ব্যাংক লোন, আইনি সেবা, অবসর ভাতা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। কাজের সুষ্ঠু, নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। শিফট, ওভারটাইম, ডেট ক্যান্সেলশন চার্জ চালু করতে হতে। নূন্যতম সম্মানী নির্ধারণ করতে হবে এবং সম্মানী বৈষম্য দূর করতে হবে।
সংস্কারবাদীদের ২২ দফা লিখিত প্রস্তাব পড়ে শোনান অভিনেতা খায়রুল বাসার। এ সময় উপস্থিতি ছিলেন আজমেরী হক বাঁধন, শ্যামল মাওলা, মনোজ প্রামাণিক, সোহেল মণ্ডল, নাজিয়া হক অর্ষা প্রমুখ। শ্যামল মাওলা বলেন, ‘তারা এখন যেভাবে বলছে, ‘ওই পক্ষ’, ‘এই পক্ষ’ আসলে কোনো পক্ষ নেই, সবাই একপক্ষ। আপনারা যারা আঙ্গুল তুলছেন, আমি আপনার পক্ষে কথা বলছি। আপনার ডেভেলপমেন্ট করছি। আমাদের পেশাটা কীভাবে আধুনিক করা যায়, সেই কথা বলছি। এখন সময় এসেছে, আরও আধুনিক করার। সবকিছুর উন্নতির দিকে নজর না দিলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাওয়া যায় না। আমরা একই পরিবার, আমাদের কথা শুনুন। আমাদের পাশে থাকুন।’ আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘শিল্পীদের দীর্ঘদিনের না পাওয়ার বঞ্চনা থেকেই আজকের এই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সব শিল্পীকেই মর্যাদা দিতে হবে। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে অটল।’
সংস্কারবাদী শিল্পীদের প্রস্তাব প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘আমরা সাধারণ সভার ঘোষণা দিয়েছি। এটি (২৮ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই সব কথা হবে। সাংগঠনিক একটা নিয়ম আছে, সেটা মেনেই কাজ করতে চাই। আমরা কমিটিতে থাকতে চাই না, চেয়ার আঁকড়ে থাকার ইচ্ছে আমাদের নেই। কিন্তু সেটা একটা সিস্টেমের মধ্যদিয়ে হস্তান্তর করতে চাই।’