বড় দুর্ভাগাবতী আমাদের এই প্রিয় সোনার বাংলাদেশ
বার বার কেমনে হয় মা তোমার এই করুন মলিন বেশ ।
তোমাকে তো তোমার সংগ্রামী সন্তানেরা বার বার করছে শুধু স্বাধীন
তুমি কেন হও বার বার দেশী ও ভিন দেশী শাসকের পরাধীন ।
প্রতি বার নতুন মালিক এসে বলে তুমি হলে এবার স্বাধীন
আগে তো ছিলে অন্য কোন স্বৈরাচার শাসক শোষকের অধীন ।
বিদায়ী শাসকের যত সব নিষ্ঠুর নির্যাতনের যাঁতাকলে
অন্যায় অত্যাচারে পিষ্ঠ জাতি পুড়ে ছাই হচ্ছে অনলে ।
ও আমার অভাগা পথহারা চির দুখী মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ
কবে হয়েছিলে তুমি পরাধীন কবেই বা হলে তুমি স্বাধীন দেশ ।
তবে কেনই বা তোমার সংগ্রামী সন্তানেরা দাবী করে বার বার
আগে ছিলে পরাধীন হইলে স্বাধীন তুমি এই প্রথম বার ।
বাংলা নামের এই ভূখন্ডটি কখনো কি ছিল একক স্বার্বভৌম স্বাধীন
যারা শুধু বাংলা কথা বলে তাদের নিয়ে এক দেশ হয় নি কোন দিন।
১৭৫৭ সালে বলা হত সিরাজ ছিল বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব
তিনি শুধু বাংলার নয় বিহার ও উরিষ্যারও ছিলেন নবাব ।
বেনিয়া ইষ্ট ইন্ডিয়া কোন্পানির নজর ভারত দখল করবে ব্রিটিশ রাজ
প্রথমেই নজর বাংলা দখল নিশ্চিন্ন হবে নির্ভিক নবাব সিরাজ ।
সেনা প্রধান মীর জাফরকে কিনে নিল লর্ড ক্লাইভ পরাজয়ের সুর
পলাশীর যুদ্ধের রক্ত গঙ্গায় মীর জাফর জয় এনে দিল ইংরেজ প্রভুর ।
১৯০৬ সালে বঙ্গভঙ্গে বাংলা ভাষীরা হয়ে যায় আলাদা প্রদেশের
১৯৪৭ সালে পূর্ব বাংলা হয়ে পূর্ব পাকিস্তান, কলোনি হয় পাকিস্তানের ।
ধর্মভিত্তিক দেশ পাকিস্তানের অংশ হয়েও হল না এতটুকু স্বাধীন
ব্রিটিশ পাকিস্তানী নির্যাতন শাসন শোষনে বাঙ্গালী নিঃশ্বেষ পরাধীন ।
১৯৭১ সালে ছাত্র জনতার বিপ্লবে মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদি রক্তের ক্লেশ
তিন লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম ত্যাগে অর্জিত পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন বাংলাদেশ ।
হাজার বছরের ইতিহাসে এই প্রথম জন্ম নিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ
বিদেশী শাসকদের তারিয়ে বাঙ্গালী শাসন প্রতিষ্ঠায় গৌরবের নেই শেষ ।
বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে বাঙ্গালীরা লাল সবুজের পতাকা উড়ায় মহাকাশে
লাল সবুজের পাসপোর্টে বাঙ্গালীরা কাজ করে উঁচ্চ শিক্ষায় জয় আনে বিশ্বে ।
তবুও সব বাঙ্গালী হল না খুশী স্বাধীনতার এত অধিকার নিজের শাসন
স্বপরিবারে খুন হলেন জাতির জনক শেখ মুজিব নিঃশেষ তার প্রশাসন ।
১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগষ্টে বলা হল পূণরায় স্বাধীন হল বাংলাদেশ
এক বাঙ্গালী থেকে শাসন ক্ষমতা লুটে নিল আর এক বাঙ্গালী বেশ ।
১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বরে বিদায় নিল সেই কুখ্যাত বিশ্বাসঘাতক মোস্তাক
মুক্ত হল বঙ্গভবন তবুও রয়ে গেল ষড়যন্ত্র ক্ষমতার লডাইয়ে সবাই হতবাক ।
১৯৭৫ ৭ নভেম্বর সিপাহী বিদ্রোহ জেনারেল খালেদ হত্যা দেশ মুক্ত অবাধ
জেনারেল জিয়ার আবির্ভাব রক্ত ক্ষয় হয় স্বাধীনতার শোকের স্বাদ ।
১৯৮১ ৩০ মার্চ শহীদ হল জেনারেল জিয়া নব শাসক জেনারেল এরশাদ
নতুন স্বাধীনতা আবার শেষ হয় স্বৈরাচারীর বিদায় গণ আন্দোলনের স্বাদ ।
পায় নি বাঙ্গালী পূর্ণ স্বাধীনতা তবুও ১৯৯৫ এর শেষে হল আন্দোলন
বেগম খালেদা জিয়া বিদায় নিল দিতে হল নতুন নির্বাচন ।
১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এলো নতুন স্বাধীনতা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার হাতে
২০০১ এ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিল তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ।
বিএনপি জামাত ক্ষমতায় এলো ২০০১ এ তবুও ব্যর্থ হল ২০০৬ সালে
শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছেড়ে না দিয়ে ধ্বংস করল তত্বাবধায়ক প্রথা অকালে ।
২০০৭ তে দেশ মুক্ত করল স্বশস্ত্র বাহিনী বিএনপি জামাতের দুঃশাসন
২০০৮ সালে বিদায় নিল স্বশস্ত্র বাহিনীর শাসন দিল সুষ্ঠ নির্বাচন ।
বিপুল বিজয় নিয়ে আবারো ক্ষমতায় এলো শেখ হাসিনা ২০০৯ য়ে
বীর দর্পে দেশ শাসন করল এক টানা সাড়ে পনের বছর দুনিয়া কাঁপায়ে ।
২০২৪ এ জানুয়ারীর নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা ৪র্থ মোট ৫ম বার করে শাসন
বিশ বছর ছয় মাস দেশ সেবা করে দেশে শেখ হাসিনা আনে বিশাল উন্নয়ন ।
মেগা প্রকল্পে দেশকে গরীব সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে দেয় উন্নয়নশীল বিশ্বে
অচিরেই উন্নত বিশ্ব ইউরোপের সাথে পাল্লা দিয়ে দেশকে গড়বে সবার শীর্ষে ।
সহ্য হয়নি বঙ্গালীর সুখ কারো কোনদিন তাই ষড়যন্ত্র চলে হাজার বছর ধরে
এক সময়রে বিশ্বের সেরা সুখী বাংলা ধ্বংস হয়েছে বার বার ষড়যন্ত্রের শিকারে ।
তাইতো এলো আবার ষড়যন্ত্র উন্নয়ন ধ্বংস করে বাঙ্গালীদের দরিদ্র করতে
মীমাংসিত দাবীর ছাত্র আন্দোলনে সরকার হটায় ইসলামী জঙ্গিদের স্বার্থে ।
দেশ জুড়ে সন্ত্রাসী তান্ডব লীলায় আগুনে পুড়িয়ে খেলে ধ্বংসের খেল
লক্ষ কোটি টাকার লক্ষাধিক বাড়ি গাড়ী ব্যবসা অট্টালিকা মেট্রোরেল ।
ছাত্রদের মিছিলের ভিতরে ও পিছনে গোপনে স্বশস্ত্র জঙ্গি খুন করে শত শত
পুলিশ ও সরকারি দলের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে দেশবাসীকে করে বিভ্রান্ত ।
প্রতিরক্ষা বাহিনী শেষে বাধ্য করে সরে যেতে নিরুপায় শেখ হাসিনা অবশেষে
নিরীহ মানুষের রক্ত ঝড়া বন্দ করতে বাধ্য হয়ে সব ছেড়ে চলে যায় বিদেশে ।
অর্জিত জঙ্গি সন্ত্রাসীদের স্বাধীনতায় পুড়েছ সারা দেশ আরো মারছে শত শত
হত্যা ধ্বংস আগুনে পোড়ানোর সংখ্যালঘু ও রাজনৈতিক নিধন চলে অবিরত।
তারা নাকি স্বাধীন করেছে নতুন বাংলাদেশ দেশ আর একবার হল স্বাধীন
আর কয় মাস, বছর পরে আবার হবে ছাত্র জনতার আন্দোলন বা সেনা শাসন ।
এটাই তো নয় দেশের শেষ স্বাধীনতা তাই আবারও তো যেতে হবে সংগ্রাম যুদ্ধে
মানুষ তো হয় না খুশী কোন সরকারেই তাই তো জনগন যায় শাসকের বিরুদ্ধে ।
শাসকের পরিবর্তন তো নয় দেশের নতুন স্বাধীনতা যায় না ইতিহাস মুছে
স্বাধীনতা বিদেশী শাসকের বিরুদ্ধে যা এক জাতির জীবনে একবারই আসে ।
যে স্বাধীনতা শুধু একবারই এসেছে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে
ভুল না সেই ত্রিশ লক্ষ শহীদ তিন লাখ মা বোন জাতির পিতা শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধুরে ।