
যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে হংকং ঘোষণা দিয়েছে, তারা আরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বৃহস্পতিবার কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলার পর এক মার্কিন বিচারক সেটি স্থগিত করেন। এতে হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা খাতের আয়ের বড় একটি অংশ অনিশ্চয়তায় পড়ে।
শুক্রবার হংকংয়ের শিক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিন চোই বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষানীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে অনুরোধ করেছি। তিনি জানান, এ বিষয়ে হংকংয়ের শিক্ষা ব্যুরো (ইডিবি) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কিছু সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে।
এ লক্ষ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে সীমা শিথিলসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এইচকেইউএসটি) এক বিবৃতিতে জানায়, হার্ভার্ডে ভর্তি হওয়া অথবা সেখানে ভর্তি হওয়ার প্রস্তাব পাওয়া শিক্ষার্থীরা চাইলে তাদের প্রতিষ্ঠানে এসে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন। এতে বলা হয়, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যেন বিঘ্ন না ঘটে, সে লক্ষ্যে এইচকেইউএসটি সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।
তারা আরও জানায়, এসব শিক্ষার্থীকে বিনাশর্তে ভর্তি, সরলীকৃত আবেদন প্রক্রিয়া এবং একাডেমিক সহায়তা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, হার্ভার্ড বিশ্বজুড়ে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কধারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে, যেখানে এইচকেইউএসটির অবস্থান ১০৫তম।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ও নিয়োগ নীতিতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ চাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিষ্ঠানটি। তিনি অভিযোগ করেন, হার্ভার্ড ‘উগ্র উদারবাদী মতাদর্শের ঘাঁটি’ এবং সেখানে ‘ইহুদি বিরোধিতা’ ও ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব’ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম বৃহস্পতিবার বলেন, হার্ভার্ড ‘হিংসা ছড়ানো এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ’ করার জন্য জবাবদিহির মুখে পড়বে।
এদিকে বেইজিং এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে জানায়, শিক্ষা সহযোগিতাকে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ও মর্যাদাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বর্তমানে হার্ভার্ডে প্রায় ১ হাজার ৩০০ চীনা শিক্ষার্থী রয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও চীনের বহু শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। বহু চীনা পরিবার এতদিন এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাধীন ও গুণগত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতীক হিসেবে দেখে এসেছে।