
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরের বেনারসি পল্লী এলাকায় ছয়টি দোকান ও দুটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশের অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এটি ডাকাতির ঘটনা নয়, কয়েকটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত চলছে। জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করা হচ্ছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার ভোর রাত ৪টা ২০ মিনিটে একটি প্রাইভেটকার থেকে তিন ব্যক্তি নেমে ‘মা মনি’ স্টোর নামে একটি মুদি দোকানের সামনে আসে। প্রথমে তারা দোকানের তালা কেটে চলে যায়। পরে আবার ফিরে এসে শাটার খুলে নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুট করে গাড়িতে তোলে। একই কৌশলে পাশের তিনটি দোকান ও দুটি বাসায় চুরি করে সংঘবদ্ধ চক্রটি।
‘মা মনি’ স্টোরের মালিক আরমান হোসেন বলেন, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে এসে দেখি শাটার লাগানো, কিন্তু তালা ভাঙা। ক্যাশ বাক্স ও মালামাল উধাও। একই অভিযোগ করেছেন পাঞ্জাবির দোকান মালিক আরিফুল ইসলাম ও সালমান বিরিয়ানি হাউসের মালিক রুবেল মিয়াও।
দোকানি রুবেল মিয়া বলেন, দোকানে ডাকাতির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ এসে আলামত সংগ্রহ করেছে, ২৮ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। নগদ টাকাসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার মালপত্র নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ২৮ বছর ধরে একই ঠিকানায় দোকান করছি। এ ধরনের দুর্ধর্ষ ঘটনা কখনো ঘটেনি। নগদ টাকাসহ দেড় লাখ টাকার মালপত্র নিয়ে গেছে। দোকানের সামনের একটি ভবনের দোতলায় আমার বাসা। রাত সোয়া ১২টার দিকে দোকান বন্ধ করে গিয়েছিলাম। যে কায়দায় দোকানে চুরি করেছে তা অবিশ্বাস্য। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। জড়িতরা শনাক্ত হোক। প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, চোর চক্রের তিন সদস্যের একজনের পায়ে কেডস এবং পরনে সবুজ স্যুট। প্রথমে সে আশপাশে নজর রাখেন এরপর তার দুই সঙ্গী দোকানে ঢুকে মালপত্র বের করে আনেন। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মিরপুর ও আশপাশের এলাকায় ছিনতাই রোধ ও দুষ্কৃতকারীদের ধরতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, সম্প্রতি মিরপুর এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী পক্ষ থেকে একাধিকবার পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়। বিশেষ করে মধ্যে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত পুলিশের টহল বাড়ানের আবেদন করেছেন বাসিন্দা।
থানা সূত্রে জানা গেছে, দোকান ও বাসাবাড়িতে চুরির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের একাধিকবার মামলা করতে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা মামলা করবেন না। তারা বলছে চাচ্ছেন, তেমন কোনও কিছু চুরি হয়নি। তাই মামলা করবেন না। তবুও বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি।’