বিরোধী পক্ষগুলোকে সশস্ত্র সংগ্রাম ছেড়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তবে বিরোধী পক্ষগুলো এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জান্তা নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র পরিচালনা কর্তৃপক্ষ স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) জান্তা শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ও বিরোধী জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি) পরিচালিত সশস্ত্র গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসকে (পিডিএফ) ‘সন্ত্রাসবাদী’ ছেড়ে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে জান্তা বাহিনীকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রেখেছে মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। গত বছরের অক্টোবর থেকে গোষ্ঠীগুলো জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করার পর থেকে দেশটির একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসএসি বলেছে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন ও পিডিএফ সন্ত্রাসবাদীদের দলীয় রাজনীতি বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলার আমন্ত্রণ জানানো হলো। যাতে তারা সশস্ত্র সন্ত্রাসী পথ ত্যাগ করে টেকসই শান্তি ও উন্নয়নের ওপর জোর দিতে জনগণের সঙ্গে হাত মেলাতে সক্ষম হয়।
তবে জান্তা সরকারের এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় ঐক্যের সরকার। এই সরকার মূলত ২০২১ সালে যে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় ছিল তাদের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। এনইউজির মুখপাত্র নেই ফোন লাট বলেছেন, এটা বিবেচনারই বিষয় নয়।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক বন্দীদের নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জান্তা বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর অন্তত ৫ হাজার ৭০৬ জন খুন হয়েছে তাদের হাতে। একই সময়ে জান্তা বাহিনী অন্তত ২১ হাজার জনকে বন্দী করেছে।
অন্যদিকে, নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করা জান্তা বাহিনী দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। মূলত নির্বাচন আয়োজনের অংশ হিসেবেই বিরোধীদের সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জান্তা সরকার জানিয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর থেকে দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ শুরু হবে, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয়।