
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা আবারও চরমে পৌঁছেছে। শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের উরি ও পুঞ্চ এলাকায় পাকিস্তানি সেনারা ভারী কামান ও গোলা ব্যবহার করে গোলাবর্ষণ শুরু করে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। ভারতের পাল্টা জবাবেও চলছে সমানতালে গোলাবর্ষণ।
এদিকে, শুক্রবার রাতে ভারতের জম্মু, সাম্বা ও পাঞ্জাবের পাঠানকোট সেক্টরে একাধিক পাকিস্তানি ড্রোনের গতিবিধি লক্ষ্য করা গেছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা সূত্র। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী জানায়, তারা সফলভাবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।
সাম্বা জেলায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরইমধ্যে আকনূরে সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ও সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহতের লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় কড়া নজরদারি ও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সীমান্তে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছে বাহিনী।
এর আগে ভারত অভিযোগ করে, বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন পাঠিয়ে জম্মু-কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলার চেষ্টা করে, যা তারা সফলভাবে প্রতিহত করেছে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা ভারতে কোনো ধরনের ড্রোন বা মিসাইল হামলা চালায়নি।
পাকিস্তানি এক সরকারি কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে বলেন, “পাকিস্তান কূটনৈতিক সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছে, তবে তা ব্যর্থ হলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। তিনি আরও দাবি করেন, ভারত মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ‘হাইপ’ তৈরি করছে।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর মহাপরিচালক লেফটেনেন্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী ভারতের মিসাইল হামলার অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেন।
ভারতের সেনাবাহিনী জানায়, জম্মু ও পাঞ্জাবের পাঠানকোট এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাদের নির্দোষিতা প্রমাণে সাহায্য করতে।
এদিকে, পরমাণু শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ।