ভারতের ওড়িশায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। মধ্যরাত পেরিয়ে ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যে দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের সামনের দিকের মেঘের অংশ স্থলভাগে ঢুকতে শুরু করে।
ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা পেরিয়ে যাওয়ার পর ভারতের আবহাওয়া দফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড় দানা’র ল্যান্ডফল বা আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। মেঘের দেয়ালের সামনের দিকের অংশ ভূভাগে প্রবেশ করেছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া চলবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যে যখন প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা’র ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন উপকূলে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
প্রতিবেদন মতে, ঘূর্ণিঝড় দানা’র ‘চোখ’ নেই! কিন্তু সেই ‘চোখ’ না থাকায় কি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও ভয়ংকর হবে? বিষয়টি নিয়ে ভুবনেশ্বরের আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিকর্তা মনোরমা মোহান্তি জানান,
“ঠিকউল্টো বিষয়টা হবে। যেহেতু চোখ নেই, তাই অতীতে ওড়িশায় যেসব ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে, তার থেকে দুর্বল হবে দানা। “
তবে তিনি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় দানা’র ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া বেশ ধীরগতির হবে। কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা চলবে ল্যান্ডফল। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়বে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে। তবে ল্যান্ডফলের পরে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আর তার জেরে দক্ষিণ ঝাড়খণ্ডে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের নতুন করে বিপদ বাড়ছে না।
ভুবনেশ্বরের আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিকর্তার ভাষ্যে,
“আগামী তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূল পার করবে দানা। আর সেইসময় ঝোড়ো হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিমি থাকবে। দমকা হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমিতেও পৌঁছে যেতে পারে। সকাল পর্যন্ত ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া চলবে। “
সেইসঙ্গে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সুন্দরবন (দক্ষিণ ২৪ পরগনা), সাগরদ্বীপ, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করবে। দমকা হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিমিতে পৌঁছে যেতে পারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যান্য অংশে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিমি বেগে ঝড় হবে। দমকা হাওয়ার বেগ ৯০ কিমি ছুঁতে পারে।
অন্যদিকে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং বাঁকুড়ায় ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিমি ঝোড়ো হাওয়া বইবে। কখনও কখনও দমকা হাওয়ার বেগ ৮০ কিমিতেও পৌঁছে যেতে পারে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঝড়ের বেগ এরকম থাকবে। তারপর কমতে শুরু করবে।