
হাবিবুর রহমান মুন্না।।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউনহল মাঠে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য বৈশাখী মেলা। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর উৎসবের মেলবন্ধনে গোটা এলাকা যেন রূপ নিয়েছে এক প্রাণচঞ্চল আনন্দধারায়। হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে শহরের প্রাণকেন্দ্র টাউনহল।

প্রতিবছরের মতো এবারও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে এ মেলা, যেখানে অংশ নিয়েছে স্থানীয় শিল্পী, হস্তশিল্পী ও ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার । উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, শিক্ষক ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

মেলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে বাহারি সাজে সজ্জিত স্টলগুলো। মাটির পুতুল, বাঁশের তৈরি হাতপাখা, কাঠের খেলনা, শীতল পাটি, জামদানি শাড়ি, হাতে আঁকা নকশা করা গয়নার স্টলগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিল মুখোশ, বায়স্কোপ ও নাগরদোলায়।

ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্টলগুলোতে ছিল পান্তা-ইলিশ, ভর্তা, মুড়ি-মুড়কি, জিলাপি, হালুয়া, নারকেল নাড়ু ও গুড়ের পায়েস। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজন পরিবার-পরিজন নিয়ে উপভোগ করেছেন এই মেলা।
মেলার মূল মঞ্চে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে লোকসংগীত, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি, নাটক ও বাউল গান। স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় তুলে ধরা হচ্ছে বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও ইতিহাস।
মেলায় ঘুরতে আসা কলেজছাত্রী মীম আক্তার বলেন, “প্রতিবছর এই মেলাতেই বৈশাখের আনন্দটা সবচেয়ে ভালোভাবে পাওয়া যায়। বন্ধুদের সঙ্গে এখানে আসাটা আমাদের নববর্ষের অন্যতম রেওয়াজ হয়ে গেছে।”
নিরাপত্তার বিষয়ে কান্দিরপাড় ফাড়িঁর (ইনচার্জ )মো.রকিবুল ইসলাম
জানান, “মেলায় আগত মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও টহলে রয়েছে। প্রত্যেক প্রবেশপথে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।যা আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।
দুনদিন ব্যাপী চলছে মেলাটি, আজকেই শেষ দিন, সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে দোকানপাট। জেলার বাইরে থেকেও বহু দর্শনার্থী এসেছেন এই মেলা উপভোগ করতে।
কুমিল্লা টাউনহলের এই বৈশাখী মেলা যেন শুধু একটি মেলা নয়, এটি হয়ে উঠেছে কুমিল্লাবাসীর সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর আনন্দ ভাগাভাগির এক অনন্য মিলনমেলা।