বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস বা কনস্যুলার অফিস না থাকায় ৫০ হাজারেরও বেশি প্রবাসী, তাদের স্বজন ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায়ও পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে পর্তুগাল প্রবাসীদের এসব সমস্যা সমাধান করতে পারে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি খোলা চিঠি শিরোনামে এক সভায় প্রবাসীরা এসব কথা বলেন।
গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পর্তুগিজ নাগরিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রবাসীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস স্থাপনের দাবিসহ আটটি বিষয় তুলে ধরা হয়।
দাবি উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠানের আয়োজক গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হাকিম মিনহাজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস বা কনস্যুলার অফিস স্থাপন পর্তুগাল প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে এটি অবশ্যই বাস্তবায়ন হতে পারে। তাই প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ কয়েকটি বিষয়ে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি আমাদের ব্যবসায়ীদের কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে যেন পর্তুগাল সরকারের কাছে এটির গুরুত্ব বাড়ে।
প্রবাসীদের মধ্যে মো. হারুন অর রশিদ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদক্ষেপ নিলে অনেক কিছুই সম্ভব।
পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রনি মোহাম্মদ বলেন, এর আগে তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পর্তুগাল সফর এবং প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস স্থাপনের ব্যাপারে আলোচনা হয়। কিন্তু পরে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। কি অগ্রগতি আছে, তাও প্রবাসীদের জানা নেই। বাংলাদেশে পর্তুগালের দূতাবাস না হলেও অন্তত কনস্যুলার অফিস স্থাপন করা জরুরি। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা সহ দায়িত্বশীলদের কাছে দাবি তুলে ধরতে হবে এবং অব্যাহতভাবে তাগাদা দিতে হবে।
পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাসেল আহম্মেদ বলেন, প্রবাসীদের কমিউনিটির সর্বস্তরের লোকজনকে একত্রিত করে এ দাবি বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রয়াস চালাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান, পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের বর্তমান সহ-সভাপতি এস এম আজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদ আহমদ প্রিন্স, প্রবাসী মুহাম্মাদ আবদুর রহিম, মোহাম্মদ রফিক উদ্দীন, নয়ন দেব, নাজমুল হাসান, ফয়ছল আহমদ, আবুল হোসাইন, আব্দুল গফফার, সিরাজুল হক শিপন, নিজামুর রহমান টিপু, ফয়জুর রহমান, মো. রুহুল আমীনসহ অনেকে।
বক্তারা জানান, বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস স্থাপনসহ প্রবাসীদের দাবিগুলো সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।