একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও লেখক আবুল হায়াত। থিয়েটার, টিভি নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে এখনো তার উপস্থিতি দর্শককে মুগ্ধ করে। নিজেকে ছড়িয়েছেন দুই হাতে, প্রতিটি ক্ষেত্রে দর্প নিয়ে ছুটে চলেছেন সমানতালে। এই দুরন্ত ছুটে চলা মানুষটি বছরে দুইবার জন্মদিনের শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনে সিক্ত হন। জন্ম ১৯৪৪ সাল এই জনপ্রিয় অভিনেতার জন্মদিন ৭ সেপ্টেম্বর হলেও ২৫ জুন তাকে সিক্ত হতে হয় ভক্ত-অনুরাগী ও কাছের মানুষের শুভেচ্ছায়।
বিষয়টি নিয়ে কিছুটা বিব্রতবোধ করলেও দুটি তারিখেই হাসিমুখে সবার শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন তিনি। তাহলে সত্যিকারের জন্মদিন কোনটি? এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল হায়াত গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমার প্রকৃত জন্মদিন মূলত ৭ সেপ্টেম্বর। সার্টিফিকেটে আব্বা দিয়েছিলেন ২৫ জুন। তবে প্রতি বছর এই দিনে অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বরই আসল জন্মদিনটা পালন করা হয়।’
আশি পেরিয়ে আজ একাশিতে পা রাখলেন ‘চিরসবুজ’খ্যাত তারকা আবুল হায়াত। একই দিনে তার নাতনিরও জন্মদিন। এ কারণে প্রতিবার সবাইকে নিয়ে বেশ আনন্দঘন পরিবেশেই জন্মদিন পালন করেন তিনি।
চলচ্চিত্র, মঞ্চনাটক এবং প্রায় এক হাজারেরও বেশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করা এ শিল্পীর প্রবল ইচ্ছে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিনয়ের ওপর ক্লাস নেওয়া। কোনো প্রতিষ্ঠান আগ্রহী হলে তিনি তা ভেবে দেখবেন বলেও জানান। পাশাপাশি তিনি বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তার অভিনয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চান। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় আবুল হায়াত মঞ্চে প্রথম ‘টিপু সুলতান’ নাটকে অভিনয় করেন। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের হয়ে মঞ্চে তার প্রথম নাটক আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। টিভিতে তার প্রথম নাটক ছিল জিয়া হায়দারের প্রযোজনায় ‘ইডিপাস’।
মঞ্চে তার নির্দেশিত প্রথম নাটক ‘আগন্তুক’ এবং টিভিতে ‘হারজিৎ’। প্রথম অভিনীত সিনেমা ঋত্বিক কুমার ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম। ১৯৭৪ সালে আলী যাকেরের নির্দেশনায় মঞ্চে ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকে অভিনয় করে তিনি ‘সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড ফর ইনট্রিডিউসিং ন্যাচারালিস্টিক অ্যাক্টিং অন বাংলাদেশ স্টেজ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। এটি বাংলাদেশে দর্শনীর বিনিময়ে প্রথম মঞ্চনাটক। আবুল হায়াত বহু বছর ধরে টিভি নাটক, সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনে সফলতার সঙ্গে অভিনয় করে আসছেন।