পর্তুগালের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় নজিরবিহীন তল্লাশি চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। অস্ত্র ও মাদক আছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এই অভিযান চালানো হয় বলে জানায় পুলিশ। তবে তল্লাশির নামে নিরীহ অভিবাসীদের হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পর্তুগালের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
বৃহস্পতিবার আচমকাই বাংলাদেশি অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকা ঘিরে ফেলে পর্তুগালের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। বিপুল সংখ্যক সদস্য, সাঁজোয়া যান ও দেশটির গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে শুরু হয় অভিযান। বন্ধ করে দেয়া হয় রোয়া দো বেনফোরমোসোর প্রবেশপথ ও বের হবার রাস্তা।
অস্ত্র ও মাদক রয়েছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান বলে জানায় পুলিশ। তবে হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে আতংক ছড়িয়ে পরে পুরো এলাকায়।
তল্লাশি করা হয় পথচারী ও বিভিন্ন কাজে সেসব এলাকায় থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও। ভিডিও ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। পর্তুগালের সচেতন মহলের দাবি নিয়মবহির্ভূতভাবে সাধারণ নাগরিকদের এমন তল্লাশির মুখে ফেলা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেন কেউ কেউ।
শুক্রবার দিনভর বাংলাদেশি অধ্যুষিত সড়ক পরিদর্শন করে পর্তুগালের সোস্যালিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সন্ধ্যায় লেফট ব্লকের প্রধান ও সংসদ সদস্য মারিয়ানা মরতাগোয়াও পরিদর্শন করেন এলাকাটি। কথা বলেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে।
পর্তুগালে হঠাৎ অনেক সাধারণ ও নিরপরাধ অভিবাসীদের এমন তল্লাশির মুখোমুখি করাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছেন সচেতন প্রবাসীরা।
পর্তুগালের সাংবাদিক ও সমাজকর্মী ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বলেন, ভোট নেয়ার জন্যই সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। পর্তুগাল আসলে এমন একটি দেশ যেখানে তারা অভিবাসীদের স্বাগত জানায়। এখনো তাদের অভিবাসী প্রয়োজন। কারণ অভিবাসী ছাড়া পর্তুগাল চলতে পারবে না। এ অভিযান রাজনৈতিক খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়।
অভিবাসীদের উপর চালানো পুলিশি তল্লাশি নিয়মবহির্ভূতভাবে হয়েছে উল্লেখ করে এটিকে অগ্রহণযোগ্য বলছেন পর্তুগালের রাজনীতিবিদরা।
পর্তুগালের সংসদ সদস্য মারিয়ানা মরতাগোয়া বলেন, আমি এবং অনেক পর্তুগীজই মনে করেন এখানে যা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অন্যায়। আমি মনে করি যারা পর্তুগালে বৈধভাবে কাজ করছে তাদের এখানে সম্মানের সঙ্গে বসবাসের অধিকার রয়েছে যেমন অনেক পর্তুগিজও বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হিসেবে আছেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার কট্টর ডানপন্থিদের খুশি করতে অভিবাসীদের অবহেলা করছে। তারা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মধ্য ডানপন্থি জোট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অভিবাসন বিরোধী নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। জটিলতা বেড়েছে নতুন রেসিডেন্স পারমিট প্রাপ্তিসহ নবায়নেও।