মুলতানে স্পিন স্বর্গ তৈরি করবে পাকিস্তান, এটা ছিল জানা কথা। সেই স্পিন স্বর্গে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের শুরুতেই রাজত্ব করলেন পাকিস্তানি স্পিনার নোমান আলি। হ্যাটট্রিক করে বসলেন তিনি। শুধু হ্যাটট্রিকই নয়, ৪১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৩ রানে অলআউট করে দিয়েছে স্বাগতিক পাকিস্তান।
মুলতানে প্রথম টেস্টেও সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাকিস্তান নাকানি-চুবানি খাইয়েছে স্পিন স্বর্গ বানিয়ে। ১২৭ রানে ক্যারিবীয়দের হারিযেছিলো পাকিস্তানিরা। এবার একই ফরমুলায় মুলতানেও ক্যারিবিয়ানদের নাজেহাল অবস্থা করে ছাড়ছেন নোমান-আবরার আহমেদরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাঁ-হাতি স্পিনার নোমান আলি ঠাঁই করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। টেস্টে প্রথম কোন পাকিস্তানি স্পিনার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের হয়ে টেস্টে এর আগে হ্যাটট্রিক ছিলো মোট পাঁচটি, যার মধ্যে ওয়াসিম আকরাম দুটি, আব্দুল রাজ্জাক, মোহাম্মদ সামি ও নাসিম শাহর একটি করে। এরা প্রত্যেকেই ছিলেন পেসার। নোমান সে জায়গায় অনন্য, একমাত্র স্পিনার হিসেবে রেকর্ডের পাতায় নাম লিখলেন।
হ্যাটট্রিক করার দিনে নোমানের বয়স ৩৮ বছর ১১০ দিন। টেস্ট ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় বয়স্ক ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। ৩৮ বছর ১৩৯ দিনে হ্যাটট্রিক করে এই রেকর্ড শ্রীলঙ্কার রঙ্গনা হেরাথের।
শনিবার মুলতানে ইনিংসের দ্বাদশ ওভারেই হ্যাটট্রিক পুরো করে ফেলেন নোমান। কেভিন সিনক্লিয়ারকে বাবর আজমের ক্যাচ বানান তিনি। তার আগের দুই বলে তিনি ফেরান জাস্টিন গ্রেইভস ও টেভিন ইমলাককে।
হ্যাটট্রিকের আগে নিজের স্পেলের শুরুতে ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের উইকেট নেন নোমান। হ্যাটট্রিকের পর নেন কেমার রোচ ও গুদাকেশ মোতির উইকেট। সব মিলিয়ে নিলেন ৬ উইকেট।
নোমানের হ্যাটট্রিকের দিনে সাজিদ খাদও নিয়েছেন দুই উইকেট। আরেক লেগ স্পিনার আবরার আহমেদও খালি হাতে থাকেননি। অভিষিক্ত পেসার কাসিফ আলিও উইকেট পান।
নোমান আলিদের ঘূর্ণি তাণ্ডবের সামনে অবশ্য শেষ মুহূর্তে পাহাড়ের মত দাঁড়িয়ে যান গুদাকেশ মোতি। ৫৫ রানের লড়াকু এক ইনিংস খেলেন তিনি। তার এই হাফ সেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়েই ৪১.১ ওভারে ১৬৩ রান তুলতে সক্ষম হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১১ নম্বর ব্যাটার জোমেল ওয়ারিকান অপরাজিত থাকেন ৩৬ রানে। ২৫ রান করেন কেমার রোচ।
অথচ, টপ ও মিডল অর্ডারে কোনো ব্যাটারই ভালোভাবে দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তানি বোলারদের সামনে। টপ অর্ডারে সর্বোচ্চ ২১ রান করেন কেভাম হজ। বাকিরা দুই অংকের ঘরও স্পর্শ করতে পারেনি।