নেপালে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৬৩ জন। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে রাজধানী কাঠমান্ডুর নিম্নাঞ্চলগুলো। এছাড়া দেশজুড়ে বন্যা ও ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে নেপালি পুলিশের মুখপাত্র দান বাহাদুর কার্কি জানান, মৃতের সংখ্যা ১০১ জনে পৌঁছেছে। নিখোঁজদের জন্য অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কাঠমান্ডু উপত্যকায় ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৭০ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। এই প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে বাগমতী নদী ও এর উপনদীগুলোতে পানি উপচে পড়ছে। এর ফলে আশপাশের এলাকার বাড়িঘর এবং যানবাহন পানিতে তলিয়ে গেছে।
মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে নেপালের পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা গত শুক্রবার থেকে জলমগ্ন। বিভিন্ন নদীতে আকস্মিক বন্যার খবর পাওয়া গেছে। মহাসড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভূমিধসে কাঠমান্ডুকে বাকি দেশ থেকে সংযুক্তকারী বেশ কয়েকটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে শত শত মানুষ আটকে পড়েছেন।
উদ্ধারকাজে তিন হাজারেরও বেশি নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতায় হেলিকপ্টার এবং নৌকাও ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্রবল বৃষ্টির কারণে শুক্রবার অভ্যন্তরীণ প্লেন চলাচল স্থগিত ছিল। তবে শনিবার আবহাওয়া উন্নতির ফলে ফ্লাইট ফের চালু হয়েছে। যদিও এর মধ্যে অন্তত ১৫০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা ও ভূমিধসের মতো দুর্যোগ দেখা দেয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে। চলতি বছর বৃষ্টি-সম্পর্কিত দুর্যোগে নেপালে এখন পর্যন্ত ২৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।