আবারও ছাদখোলা বাসে শিরোপা উদযাপনের হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। সেই পুরনো প্রতিপক্ষ নেপাল আর দশরথ রঙ্গশালায় ইতিহাসের হাতছানি। গতবারের তুলনায় এবার দলে এসেছে কিছুটা পরিবর্তন। বদল হয়েছে প্রধান কোচ। তবে এসব ভাবনায় নেই সাবিনাদের। ফুটবলাররা জানে কঠিন ম্যাচ, তার জন্য আছে সর্বোচ্চটা নিংড়ে দেয়ার প্রস্তুতি। বুধবার (৩০ অক্টোবর) ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা পৌন ৭টায়।
পিটার বাটলার কি নিতে পারবেন গোলাম রব্বানী ছোটনের স্থান? আর তো মাত্র একটি ম্যাচ! ওটা জিতে গেলেই বাংলার নারী ফুটবলের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে যাবেন এই ব্রিটিশ। গেল সাফের ফাইনালটা সানজিদা-মারিয়ারা খেলেছিলেন প্রিয় ছোটন স্যারের জন্য। সাবিনার দল এবার খেলবে তো পিটারের জন্য? দলের ভেতরের খবর বলছে হয়তো না! তাহলে ফুটবলাররা এই ফাইনাল খেলুক নিজেদের জন্য।
গোলাম রব্বানী ছোটন আপাতত অতীত বাংলার নারী ফুটবলে। তবে না থেকেও দলে তার প্রভাব স্পষ্ট। ম্যাচ সেরা হয়ে সেই স্বীকৃতি পিটারকে উৎসর্গ না করে গোলাম রব্বানীকে করেন তহুরা। ফাইনালের আগে এই বিষয়গুলো বড় করে না দেখলেও হয়তো হতো, কিন্তু ফুটবলাররা এখনও যে সেই গন্ডীতে আটকে। তারা হয়তো ভাবেনই না গার্দিওলা চলে যাওয়ার পরও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা বন্ধ করেননি মেসি!
একটা দলের বাইরে অর্জন সবই ব্যক্তিগত। সাবিনা, সানজিদা, মনিকারা যদি আরও একটা সাফ উপহার দেন দেশকে, ইতিহাস আজীবন মনে রাখবে তাদের। কার কোচিংয়ে ইতিহাসের জন্ম হয়েছিলো একটা সময় এটা চলে যাবে আলোচনার বাইরে। সেটা অনুধাবন করে পারফরর্ম করে গেলেই আবারও তৈরি হতে পারে আরও একটা ছাদখোলা বাসে উদযাপনের উপলক্ষ্য।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘ইতিহাস রচনা আপুরা গতবারই করেছে। এবার আমাদের সামনে তা ধরে রাখার পালা। আমরা অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করব। নেপালের বিপক্ষে এর আগেও দুইটি ম্যাচ খেলেছি। ঐ ম্যাচগুলো যেভাবে খেলেছি, সেভাবেই মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলার চেষ্টা করব। আশা করছি নেপালও ভালো ফুটবল খেলবে, আমরাও ওইভাবেই মাঠে নামব।’
এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখতে পারলে নতুন বাংলাদেশে আবারও ছাদখোলা বাসে উদযাপন হবে কি’না তা হয়তো সময়ই বলে দেবে। ফুটবলাররা অবশ্যই উদযাপনের ভাবনায় আগেই থেকেই ডুব দেবেন না। যেমন ডুবে নেই কোচ। তিনি খুব ভালো করেই জানেন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ কতটা কঠিন। তবে শিষ্যদের ওপর আস্থা রাখা ছাড়া দ্বিতীয় কোন অপশনই যে নেই বৃটিশ কোচের।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার বলেন, ‘আমাদের ফুটবলাররা বেশ কম্পিটিটিভি ফুটবল খেলছে। আমার পূর্ণ আস্থা আছে শিষ্যদের ওপর। আমি জানি ম্যাচটা বেশ কঠিন হবে। অনেক কিছু থেকেই স্বাগতিকরা সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করবে। তবে আমি শুধু ফোকাস রাখতে চাই নিজেদের পারফরমেন্সের ওপর।’
দশরথ রঙ্গশালায় আবারও রংচং-এ উপলক্ষ। সেই রং নিজেদের গায়ে মাখিয়ে হিমালয়ের হিম-শীতল পরিবেশে উষ্ণতা ছড়াতে পারবে তো বাংলাদেশ? না’কি হোম কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে প্রতিশোধের আনন্দে মাতবে নেপাল?