কখনো স্বপ্নচারিণীর কবিতা কিংবা পাগলা হাওয়ায় বন্ধু আসার বার্তা দেন গানের সুরে। আবার গানের সুরেই আকাশের কাছে জানতে চান মায়ের কথা।বুক ফাটা প্রেমিকের আর্তনাদে হয়ে ওঠেন এক নদী যমুনা। তিনি বরাবরই তারুণ্যের জোয়ারে উম্মাতাল। যার গানের উম্মাতালে সদা ভদ্র ছেলেটিও খানিক সময়ের জন্য পরিণত হন দুষ্টু ছেলের দলে।
বলছি নগরবাউল জেমসের কথা। বুধবার (০২ অক্টোবর) তার জন্মদিন। সঙ্গীতের নন্দিত তারকা জেমস ১৯৬৪ সালের নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন।
জেমসের পারিবারিক নাম মাহফুজ আনাম। তবে তার কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং-এ। বন্ধুদের নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের সঙ্গে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ হয়।
১৯৮৮ সালে আসে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’। পরবর্তীতে ‘ফিলিংস’-এর নাম পরিবর্তন করে দেন ‘নগর বাউল’। জেমস-এর ব্যান্ড ও একক অ্যালবামের মধ্যে আরো রয়েছে- লেইস ফিতা লেইস, নগর বাউল, দুষ্টু ছেলের দল, পালাবে কোথায়, দুঃখিনী দুঃখ করো না, আমি তোমাদেরই লোক ও কাল যমুনা।
বাংলাদেশি সিনেমায় জেমসের গান বেশ জনপ্রিয়। দুইবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শুধু দেশীয় প্লেব্যাক নয়, বলিউডেও রাজত্ব করেছেন এই রক তারকা। তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’, ‘চাল চালে’, ‘আলবিদা’, ‘রিশতে’ এবং ‘বেবাসি’ গানগুলো এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়।
জেমসের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘তারায় তারায়’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘সুলতানা বিবিয়ানা’, ‘সুস্মিতার সবুজ ওড়না’, ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’, ‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী’, ‘দুস্টু ছেলের দল’, ‘দিদিমনি’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘তোর সব কিছুতে নয় ছয়’, ‘বাবা কত দিন দেখি না তোমায়’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘এক নদী যমুনা’ ইত্যাদি।
ব্যক্তিজীবনে জেমস দুই বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী ছিলেন রথি। তিনি ছিলেন একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ১৯৯১ সালে বিয়ের পর ২০০৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রথির সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই ২০০২ সালে জেমস বিয়ে করেন বেনজির সাজ্জাদকে। জেমসের দুইটি কন্যা সন্তান (জান্নাত এবং জাহান) ও একটি পুত্র সন্তান (দানেশ) রয়েছে।