
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধনকুবের ইলন মাস্কের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যুক্ত সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছেন। অন্যদিকে মাস্ক পাল্টা জবাবে ট্রাম্পকে অভিশংসনের আহ্বান জানান। এক সময়ে ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকলেও এখন প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন মার্কিন এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি। এর আগে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরে যান মাস্ক।
ট্রাম্প ওভাল অফিস থেকে টেসলার সিইও ইলন মাস্কের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। এক্ষেত্রে ট্রাম্প ব্যবহার করেন নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল ও মাস্ক ব্যবহার করেন এক্স।
ট্রাম্প এক পোস্টে লেখেন, আমাদের বাজেট থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ইলনের সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তিগুলো বাতিল করা।
এর ফলে ওয়াল স্ট্রিটে টেসলার শেয়ারের বড় পতন ঘটে। একদিনেই কোম্পানিটির বাজারমূল্য প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার কমে যায়, যা টেসলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ একদিনের ক্ষতি।
শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার কিছু পরেই মাস্ক এক এক্স পোস্টে ‘হ্যাঁ’ মন্তব্য করে জানান ট্রাম্পকে অভিশংসন করা উচিত। যদিও কংগ্রেসের উভয় কক্ষে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় অভিশংসনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
এই দ্বন্দ্বের সূচনা কয়েকদিন আগেই হয়, যখন মাস্ক ট্রাম্পের প্রস্তাবিত করছাড় ও ব্যয় বিলের বিরোধিতা করেন। মাস্ক দাবি করেন, বিলটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণকে ৩৬ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়াবে।
প্রথমদিকে ট্রাম্প চুপ থাকলেও বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের বলেন, আমি ইলনের আচরণে খুবই হতাশ। আমাদের সম্পর্কটা একসময় ভালো ছিল, এখন আর হবে কি না জানি না।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মাস্ক একের পর এক তীব্র মন্তব্য করেন এক্স-এ। তিনি লেখেন, আমার সহায়তা না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে হারতেন। মাস্ক গত নির্বাচনে ট্রাম্প ও অন্যান্য রিপাবলিকানদের জন্য প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন।
আরেক পোস্টে মাস্ক দাবি করেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি চলতি বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে মন্দার মুখে ফেলবে।
মাস্কের টেসলা ছাড়াও তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং স্যাটেলাইট ইউনিট স্টারলিংক।
ট্রাম্পের হুমকির পর মাস্ক বলেন, তিনি স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযান ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবেন। ড্রাগন হচ্ছে একমাত্র মার্কিন যান, যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী পাঠাতে সক্ষম।