চতুর্থ দিনই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল মুলতান টেস্টের ভাগ্য। তবে পাকিস্তানের কাছে সুযোগ ছিল ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোর। শেষমেশ সেটাও পারল না তারা। ইনিংস ব্যবধানে হেরে লজ্জার রেকর্ড গড়েছে শান মাসুদের দল।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে মুখ থুবড়ে পড়েছে পাকিস্তান দল। ইনিংস এবং ৪৭ রানের ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিকরা। ব্যাটিং উইকেটে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ৫৫৬ রান করেছিল পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ৮২৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ২২০ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা এবারই প্রথম দেখল ক্রিকেটবিশ্ব। প্রথম ইনিংসে ৫০০’র বেশি রান করে প্রথম দল হিসেবে ইনিংস ব্যবধানে হারল পাকিস্তান। ইনিংস ব্যবধানে হারের অভিজ্ঞতা প্রথমবার হলেও প্রথম ইনিংসে পাঁচ শতাধিক রান করে আরও চারবার হেরেছে পাকিস্তান।
এই হারে লাল বলের ক্রিকেটে ব্যর্থতার পাল্লা আরও ভারী হলো পাকিস্তানের। দেশের মাটিতে এ নিয়ে টানা ১১ টেস্ট জয়হীন পাকিস্তান। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল দলটি। পাকিস্তান ক্রিকেটে এর আগে এমন ১১ ম্যাচ জয়হীন থাকার ঘটনা ঘটেছিল ৪৯ বছর আগে। তবে সেবার সেই ১১ ম্যাচের মধ্যে ১০টিতে ড্র করেছিল দলটি। এবার বেশিরভাগই হার।
শান মাসুদের অধিনায়কত্বে এই নিয়ে মোট ৬ বার হারল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দিয়ে নেতৃত্ব শুরু করার পর এখন পর্যন্ত দলকে একটিও জয় এনে দিতে পারেননি এই অধিনায়ক।
৬ উইকেটে ৫২ রান নিয়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করেছিল পাকিস্তান। ম্যাচ বাঁচাতে হলে প্রায় পুরো দিনই ব্যাট করতে হতো পাকিস্তানকে। আর ইনিংস হার এড়াতে দরকার ছিল ১১৫ রান। তবে কোনোটাই করতে পারল না পাকিস্তান।
গত দিন ৪১ রানে অপরাজিত থাকা আগা সালমান এদিন ফিফটির দেখা পেয়েছেন। তবে ফিফটি পেরিয়ে বেশিদূর যেতে পারেনিনি তিনি। ৫৫ রান করে ফেরেন এই ব্যাটার। তার বিদায়ের পর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি ও নাসিম শাহ। আর অসুস্থ থাকায় ব্যাট করতে পারেননি আবরার আহমেদ। তাই ৯ উইকেট পরার পরই শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। আমের জামাল অপরাজিত ছিলেন ১০৪ বলে ৫৫ রান করে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে তিন সেঞ্চুরিতে ৫৫৬ রানের বড় পুঁজি পেয়েছিল পাকিস্তান। তবে জো রুট ও হ্যারি ব্রুকের বিশ্বরেকর্ড গড়া জুটির সঙ্গে জ্যাক ক্রাউলি ও বেন ডাকেটের মাঝারি দুটি ইনিংসে ভর করে ইংল্যান্ড ৮২৩ রান করে নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করে। ব্রুক ক্যারিয়ারে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির দেখা পান, রুট ষষ্ঠবারের মতো করেন ডাবল সেঞ্চুরি। ব্রুকের ৩১৭ রানের মতো রুটের ২৬২ রানের ইনিংসটাও ক্যারিয়ারসেরা। তাদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ২৬৭ রানের লিড নেয় পাকিস্তান।
২৬৭ রানের লিডকে সামনে রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মুখ থুবড়ে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডার। ১০০ রান ছোঁয়ার আগেই সাজঘরের পথ ধরেন ৬ ব্যাটার। সপ্তম উইকেটে সালমান এবং আমের জামাল ১০৯ রানের জুটি গড়লেও দলের হার এড়াতে পারেননি।