গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ মঙ্গলবার মিসর সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই সফরে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়েও মিসরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে একটি চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। এই চুক্তির উদ্দেশ্য হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করা।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় বাধা দুটি। একটি হলো গাজা ও মিসরের মধ্যকার অসামরিক অঞ্চল ফিলাডেলফি করিডরের নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায় ইসরায়েল। অন্যটি হলো বন্দিবিনিময়ের রূপরেখা চূড়ান্ত করা।
আল–জাজিরার খবরে জানা গেছে, মিসরের সঙ্গে ইসরায়েলের ১৯৭৯ সালের ক্যাম্প ডেভিড শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে গাজার দক্ষিণে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০০ মিটার প্রস্থ এই ফিলাডেলফি করিডর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই করিডরকে ‘অসামরিক অঞ্চল’ ঘোষণা করা হয়।
বর্তমানে ফিলাডেলফি করিডর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি চলাকালে এই করিডরে ইসরায়েলি সেনা মোতায়েন রাখা নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতি চলাকালে সীমান্ত এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করা, ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগ লাঘব ও বৃহত্তর আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে আলোচনা করবেন ব্লিঙ্কেন।
কয়েক দশকের পুরোনো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে নতুন করে রক্তপাতের সূত্রপাত হয় গত ৭ অক্টোবর। সেদিন ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং জিম্মি করা হয় ২৫০ জনকে।
হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অঞ্চলটির ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সেখানে খাদ্য–সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে দেশটি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।