
রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন সিরিয়ার স্বৈরশ্বাসক বাশার আল আসাদ। রাজনৈতিক আশ্রয়ে পরিবারের সদস্যরাসহ তিনি মস্কোয় অবস্থান করছেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস ও রিয়া নভস্তির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তার পরিবারের সদস্যরা মস্কোয় পৌঁছেছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে রাশিয়া তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।
এর আগে রোববার বিদ্রোহীরা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখলে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর দেশ ছাড়েন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। প্রেসিডেন্টের বাসভবন ত্যাগ করে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিমানে করে পালিয়ে যান তিনি। তার গন্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যেই এবার জানা গেল এ তথ্য।
উল্লেখ্য, আসাদ তার বাবা হাফেজ আল আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে ক্ষমতায় বসেন। তার বাবাও ২৯ বছর ধরে সিরিয়া শাসন করেছেন। তিনিও অনেকটা তার ছেলে বাশার আল-আসাদের মতোই। দমনপীড়ন চালিয়ে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে ছিলেন।

আসাদ তার বাবার মৃত্যুর পর কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং দমনমূলক রাজনৈতিক কাঠামোর উত্তরাধিকারী হন, যেখানে বিরোধিতা সহ্য করা হতো না।
প্রথমে মনে হয়েছিল, আসাদ আলাদা হবেন। তার বাবার চেয়ে উদার, বর্বরতাহীন। কিন্তু অল্প সময় পরেই সেই ভুল ভাঙলো।
আসাদ চিরকাল এমন একজন শাসক হিসোবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন; যিনি ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সহিংসভাবে দমন করেন। যা পরে দেশটিকে গৃহযুদ্ধের দিকে চালিত করেছিল। প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন, উদ্ধাস্তু হয়েছিলেন কয়েক লাখ।
সে সময় রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় তিনি বিদ্রোহীদের দমন করে টিকে থাকেন। রাশিয়া তার শক্তিশালী বিমানশক্তি দিয়ে সহায়তা করেছে; অন্যদিকে ইরান সিরিয়ায় সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছে এবং হিজবুল্লাহ তাদের প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের মোতায়েন করেছে।
কিন্তু এবার তা হয়নি। তার মিত্রদের অনেকেই যারা তাদের নিজস্ব বিষয় নিয়ে ব্যস্ত ছিল; তারা মূলত তাকে ত্যাগ করেছে। তাদের সাহায্য ছাড়া আসাদের সৈন্যরা বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়তে অক্ষম ছিল। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা বিদ্রোহীদের দমন করতেও চায়নি। ফলে সিরিয়ার ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ক্রমেই সামনে এগিয়ে গেছে এবং আসাদকে উৎখাত করেই ছেড়েছে।