নীলফামারীতে সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের বাড়ি ও আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। রোববার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এমপির পাশের বাড়ির ফুড অফিসের পার্কিং করে রাখা নয়টি মোটরসাইকেল ও মাদারমোড় রোড়ে এক সংবাদকর্মীর মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়। আহতরা নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, আন্দোলনকারীরা শহরের বড় বাজার এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি চৌরঙ্গী মোড় হয়ে জেলা প্রশাসক চত্বরে অবস্থান নেয়। এ সময় ডিসি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ইট-পাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এ সময় এনটিভির সাংবাদিক সিঁথুন ইয়াসিনসহ অন্তত ২৫ আন্দোলনকারী আহত হন। পরে আন্দোলনকারীরা পিছু হটে আবার চৌরঙ্গী মোড়ে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে আন্দোলনকারীরা সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের ফুড অফিসের বাসভবনে ঢুকে ভাঙচুর করেন। এ সময় ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেখান থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এদিকে এক দফা দাবিতে জলঢাকা, ডোমার ও সৈয়দপুরেও বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। জেলার সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান নীলফামারী শহর ও সৈয়দপুর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে শহরে পুলিশ টহল দিচ্ছে।
সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের নামে আমার বাড়ি ভাঙচুর হওয়ার কথা নয়। যদি ছাত্ররা এ কাজ করে থাকেন তাহলে তাদের কেউ মিসগাইড করেছে। আমি ছাত্রদের ছাত্র হিসেবেই দেখি। তারা কোনো দলের, এ বিবেচনা করি না। আমার বাড়ি ভাঙচুর হওয়াকে কেন্দ্র করে যাতে আর কোনো প্রতিহিংসামূলক ঘটনা না ঘটে সেটাই আমি বলব। আমি চাই নীলফামারীতে শান্তি বজায় থাকুক।’
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে বলেন, আহত ১২জন চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন এখানে। এরমধ্যে দুজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যরা ক্লিনিকের চিকিৎসা নিতে পারেন।
নীলফামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বিকেলে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।