
জমজমাট ফাইনালের টাইব্রেকারে আবাহনী লিমিটেডকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে ফেডারেশন কাপে নিজেদের চতুর্থ শিরোপা জিতে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস।
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনার পারদ চড়েছে বারবার।নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেই অতিরিক্ত সময়ও শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে, যেখানে শ্রাবণ হয়ে ওঠেন কিংসের নায়ক।
এই ম্যাচের মূল অংশটি খেলা হয় ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার। তবে আলোকস্বল্পতার কারণে অতিরিক্ত সময়ের শেষ ১৫ মিনিট খেলা স্থগিত হয়ে যায়। এক সপ্তাহ পর সেই অবশিষ্ট ১৫ মিনিট খেলতে নামে দুই দল।
শেষ ১৫ মিনিটের খেলায় ১০ জনের দল নিয়েও কিংস দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে। আবাহনী বারবার আক্রমণ করেও গোলের মুখ খুঁজে পায়নি। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারেও ছিল নাটক। কিংসের হয়ে প্রথম শটেই গোল করেন জোনাথন ফার্নান্দেজ। আবাহনীর হয়ে জবাব দেন রাফায়েল আগুস্তো (১-১)। এরপর মোরসালিন ঠাণ্ডা মাথায় কিংসকে ২-১ এগিয়ে নেন।
মাঝে আবাহনীর এমেকার শট দুর্দান্তভাবে রুখে দেন কিংস গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। কিন্তু তপু বর্মন কিংসকে ৩-১ এ এগিয়ে নেন। পরে সবুজ গোল করে ব্যবধান কমান (৩-২)। আর ইনসান আলী গোল করলে স্কোরলাইন হয় ৪-২।
এরপর আসে বিতর্কিত মুহূর্ত। মিরাজুল ইসলামের শট প্রথমে ঠেকান শ্রাবণ, কিন্তু রেফারির মতে তিনি গোললাইন অতিক্রম করেছিলেন। পুনরায় নেওয়া শটে গোল করেন মিরাজুল (৪-৩)।
শেষ শটটি নিতে আসেন ব্রাজিলিয়ান ডেসিয়েল। তার সুনির্দিষ্ট শট গোলরেখা অতিক্রম করতেই বসুন্ধরা কিংসের জয় নিশ্চিত হয় — ৫-৩!
টাইব্রেকারে গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ হয়ে উঠেন বসুন্ধরার সোনার ছেলে। এমেকার শট ঠেকিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। তার পারফরম্যান্সের ওপরই দাঁড়িয়ে যায় কিংসের শিরোপা।
টাইব্রেকারে শ্রাবণের প্রথম সেভে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবাদ জানান কিংসের গোলরক্ষক কোচ নুরুজ্জামান নয়ন। প্রতিবাদের জন্য রেফারি সায়মন সানি তাকে হলুদ কার্ড দেখান।
এই জয়ে কিংস যেন মিষ্টি প্রতিশোধও নিল। কোয়ালিফায়ারে ঠিক একইভাবে দশজনের দল নিয়ে আবাহনী টাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়েছিল। এবার ঠিক তার উল্টো — দশজন নিয়ে কিংস হারালো আবাহনীকে।
সেই কোয়ালিফায়ারে কিংস কোচ ভালেরি তিতে শেষ মুহূর্তে জিকোকে নামিয়েছিলেন টাইব্রেকারের জন্য। এবার টাইব্রেকারের আগে তিনিও দুটি পরিবর্তন করেন, তবে গোল পোস্টের নিচে আস্থা রাখেন শ্রাবণের ওপর, যা শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায় সঠিক সিদ্ধান্ত।