বর্তমান পরিস্থিতিতে চলমান এইচএসসির বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিল করে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে সাইন্সল্যাব মোড়ে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানান।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেওয়ার মতো মানসিকতা শিক্ষার্থীদের নেই। সেজন্য যে পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে তার আলোকে বাকি পরীক্ষার ফল দিতে হবে।
আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী রিফাত বলেন, আন্দোলনে অনেক ব্যাচমেট আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। এই সময়ে পরীক্ষা নিলে ওই শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের স্বীকার হবে। তাই বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হোক।
এসময় তারা ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবি গুলো হলো-
১. জোর করে পরীক্ষা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক পরীক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছেন। সবার কথা বিবেচনা করে স্থগিত পরীক্ষা না দিয়ে বিকল্প মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. নুতন রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করতে ডিসেম্বর মাস চলে যাবে। এর ফলে সময় অপচয় হবে।
৩. বিকল্প মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ কোনো বোর্ড পরীক্ষা ৫-৬ মাস চলতে পারে না ।
৪. অবিলম্বে এইচএসসি পরীক্ষর্থীদের এই দাবি মেনে নিতে হবে।
পরে দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে নীলক্ষেত মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলে যান।
এর আগে গত ৩০ জুন থেকে শুরু হওয়া এইচএসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তবে বন্যার কারণে সিলেট শিক্ষা বোর্ডসহ ওই অঞ্চলের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা ৯ জুলাইয়ের পরে অংশ নিয়েছেন।
কিন্তু সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ১৬ জুলাই রাতেই সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ১৮ জুলাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে ১ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা স্থগিত করে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ৪ অগাস্ট থেকে পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষাগুলোও স্থগিত হয়ে যায়।
বার বার স্থগিতের পর ১১ অগাস্ট থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে গেলে পরীক্ষা ফের স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সবশেষ আবার ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য নতুন সূচি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।