বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়াবিদরা বুধবার মানববন্ধন করেছেন পল্টনস্থ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ টাওয়ারে সামনে। এ মানববন্ধনের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক, তারকা গোলরক্ষক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম, সাবেক ছাত্র নেতা সাবেক সংসদ সদস্য খায়রুল কবীর খোকনসহ বিভিন্ন ফেডারেশনের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ মানববন্ধনে উপস্থিত যারা ছিলেন বেশিরভাগ সংগঠকই বিএনপি ঘরোনার। এদের মধ্যে অনেকেই চেনা সংগঠক আছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে গত ১৬ বছর তাদের কোনো ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশনে জায়গা হয়নি। আবার কিছু নতুন মুখও ছিল, যাদের কখনো আগে ক্রীড়াঙ্গনে দেখা যায়নি।
সাবেক গোলরক্ষক আমিনুল হক বলেছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনে যে দুর্নীতির অভিযোগ আমরা বিভিন্ন সময়ে পেয়েছি সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িয়ে আছেন আমরা সকলকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। আমরা বাংলাদেশকে, ক্রীড়াঙ্গনকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চাই। দুর্নীতিবাজদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের সামনে একটি দুর্নীতিমুক্ত ও দলীয়মুক্ত ক্রীড়াঙ্গন উপহার দেবো।
বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গত ১৭ বছর দেশের সকল ফেডারেশনে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী কায়দায় রাজনীতিকরণ করেছে। ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ এখন স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনের নতুন করে সংস্কারের লক্ষ্যে আমরা আজকের থেকে কাজে নেমেছি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদসহ প্রত্যেকটি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনে সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও ফুটবল ফেডারেশন থেকে শুরু করে অন্যান্য ফেডারেশনে কর্মকর্তারা নাই। কেন জানেন? কারণ, তারা দুর্নীতিগ্রস্থ।
‘ক্রীড়াঙ্গন রাজনীতির জায়গা নয়। যদি তারা দুর্নীতি না করতেন, তাহলে পালিয়ে যেতেন না। আমি দৃঢ়তার সাথে বলছি, যারা আপনারা পালিয়ে গেছেন, তারা যেই হোন না কেন, দুর্নীতি প্রমান হলে আপনাদের বিচার করা হবে। আমরা চাই, যারা দেশকে ভালোবাসেন, যারা ক্রীড়াঙ্গনকে ভালোবাসেন তাদের প্রত্যেকটি মানুষকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব দেবো। কোনো দুর্নীতিবাজ ক্রীড়া সংগঠককে কোনো ফেডারেশনে আমরা আর দেখতে চাই না।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিয়ে আমিনুল বলেছেন, ‘আইসিসির কিছু বাধা রয়েছে। আমরা অবশ্যই সেটা মেনে কিভাবে সুন্দর করে ক্রিকেট বোর্ড সাজানো যায়, সেভাবে কাজ করবো। আইসিসির নিয়ম মেনেই সংস্কার আনা হবে ক্রিকেট বোর্ডে। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলতে চাই, দক্ষ ও প্রকৃত সংগঠক যারা আছেন তাদের ফিরিয়ে আনবো।
‘আমি ক্রীড়া উপদেষ্টাকে অনুরোধ করবো, আপনি ক্রীড়াঙ্গনের সকলের সঙ্গে বসে আলোচনা করে, পরামর্শ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার শুরু করবেন। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় সংস্কার আনতে হবে। প্রত্যেকটি জায়গাতেই আওয়ামী লীগের স্বৈরাচার ও প্রেতাত্মারা বসে আছেন। প্রত্যেকটি ফেডারেশনেই কাউন্সিলর আছেন। সবগুলোই আওয়ামীকরণ করে রাখা হয়েছে। আমি আশা করি, সবাই পতদ্যাগ করবেন। আমি আবারো বলছি, ক্রিকেট বোর্ড ও ফুটবল ফেডারেশনে যারা বসে আছেন এবং বসে থাকতে চান তারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন।’