
কানাডায় জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সোমবার (২৮ এপ্রিল)। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, পুরোপুরি পাল্টে যাওয়া এক রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যে কানাডাবাসী তাদের নতুন সরকার নির্বাচন করছেন। কানাডার এই নির্বাচনকে অনেকেই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে দেখছেন।
নির্বাচনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকি ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার মন্তব্য কানাডার রাজনীতিতে প্রবল প্রভাব ফেলেছে। ট্রাম্পের হুমকির জেরে কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার তৈরি হয়। এই আবহে লিবারেল পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে। রাজনীতিতে নবাগত কার্নি এর আগে কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ভোটের ঠিক আগের দিন, রোববার (২৭ এপ্রিল) ভ্যাঙ্কুভারে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। জনসমাগমে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ১১ জন নিহত ও অনেকে আহত হন। এই ঘটনার পর কার্নি তার নির্বাচনী প্রচার সাময়িক স্থগিত করেন। একইভাবে কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী পিয়েরে পলিয়েভ্রেও তার প্রচারে এই ঘটনার প্রসঙ্গ তোলেন। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই দুর্ঘটনা ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করবে না।
নির্বাচনের প্রাক্কালে দুটি জরিপে লিবারেল পার্টিকে এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। ইপসোসের জরিপে দেখা গেছে, লিবারেল দল ৪২ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছে, যেখানে কনজারভেটিভ দল পেয়েছে ৩৮ শতাংশ। আরেক জরিপকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাংগাস রেইডের জরিপে লিবারেলরা ৪৪ শতাংশ ও কনজারভেটিভরা ৪০ শতাংশ সমর্থন পেয়েছে।
জরিপের ফলাফলে ইঙ্গিত মিলছে, লিবারেল পার্টি টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে পারে। তবে মার্ক কার্নি সম্ভবত হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন না, ফলে ছোট দলগুলোর সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।
এদিকে, ট্রাম্পের মন্তব্য নির্বাচনের অন্যতম ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। তিনি কানাডার তৈরি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য করার কথা বলেছেন, যা দেশটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ভ্যাঙ্কুভারের ৩৭ বছর বয়সী উদ্যোক্তা অ্যান্ডি হিল বলেন, “সম্ভবত আমি এবার কার্নিকে ভোট দেব, কারণ এখন আমাদের স্থিতিশীলতার প্রয়োজন।” অন্যদিকে, দক্ষিণ ক্যালগেরির ৬৬ বছর বয়সী খামার মালিক বব লো জানান, তিনি ইতিমধ্যে কনজারভেটিভ দলের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন।