মালয়েশিয়া ইএসকেএলের টার্মিনেশন স্থগিত করল হাইকোর্ট

মালয়েশিয়া অবস্থান করা বাংলাদেশি প্রবাসীদের সেবা প্রদানকারি ওয়ান স্টপ সার্ভিসেস আউটসোর্সিং কোম্পানি এক্সপ্যাট সার্ভিস কুয়ালালামপুরের (ইএসকেএল) টার্মিনেশন স্থগিত করেছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট। সম্প্রতি এ রায় দেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ হাইকমিশন ইএসকেএলের সঙ্গে চুক্তি করে।  বছর না যেতেই ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক নোটিশের মাধ্যমে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। 

চুক্তির ৮ (বি) ধারায় বর্ণিত শর্তাবলী অনুসারে, চুক্তি সমাপ্তির জন্য ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশন ইএসকেএলকে তিন মাসের লিখিত নোটিশ দেয়।  চুক্তির সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২ মার্চের মধ্যে চুক্তির আওতাধীন সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে ইএসকেএলকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সময় বেধে দেয় হাইকমিশন। 

ইএসকেএলের এমআরপি ও ই-পাসপোর্ট সেবা প্রদানে সরকারি অনুমতি থাকলেও হাইকমিশনের পাসপোর্ট উইং যাতে দ্রুত ও সহজে এমআরপি প্রসেসিং পরিচালনা করতে পারে সেজন্য ই-পাসপোর্ট ও ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য চুক্তি হয়। 

চুক্তির ৮(বি) ধারায় বলা হয়, এক বছর চুক্তির মেয়াদ সফলভাবে পার করার পরে অবশ্যই পাঁচ বছর বাড়ানো হবে।  তবে চুক্তি না মেনে মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে না।  এতে করে বিপাকে পড়বেন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।  তাদের কথা চিন্তা করে ইএসকেএল টার্মিনেশনের বিপরীতে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি  বাংলাদেশ হাইকোর্ট  হাইকমিশনের টার্মিনেশনের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। 

গত কয়েক মাসে ওয়ান স্টপ সার্ভিস পাওয়া প্রবাসীদের মতে, প্রত্যেকটি বহিঃরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কনস্যুলার সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার নাগরিক পাসপোর্ট নবায়ন, এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কাজ সম্পন্ন করতে হাইকমিশনের দ্বারস্থ হন। কিন্তু হাইকমিশনের দীর্ঘসূত্রিতা, অব্যবস্থাপনা ও দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে যদি প্রবাসীরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন তবে প্রবাসী আয়ের উপর নির্ভর দেশের অর্থনীতি হুমকির মধ্যে পড়তে বাধ্য। এরই ধারাবাহিকতায় বার বার রেমিটেন্স শাটডাউনের মত অর্থনৈতিক বিধ্বংসীর এমনই হুমকি আসে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের একটি অংশ থেকে। তাদের চাওয়া পাসপোর্ট ইস্যু নিয়ে সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান।

এ বিষয়ে লিংকন ইউনিভার্সিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. জাহিদ সিরাজ চৌধুরী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ইএসকেএলের সেবা সম্পর্কে অবগত। তাদের পুরো প্রক্রিয়াটি এতটাই সহজ ও দ্রুত যে আমি অভিভূত।  যেখানে হাই কমিশনে গেলে সম্পূর্ণ সনাতন পদ্ধতিতে কাজ করা হয়, সেখানে ইএসকেএল একই ছাদের নিচে দ্রুত সময়ের মধ্যেই একই কাজ সম্পন্ন করছে।  কোনো দালাল নেই, কোনো অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সুযোগ নেই।

  • Related Posts

    আন্দোলনকারীদের রাজপথ না ছাড়ার আহ্বান হাসনাত আব্দুল্লাহর

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত জানালেও এখনই রাজপথ না ছাড়তে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। শনিবার (১০ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় উপদেষ্টা…

    Continue reading
    জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে

    আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জানানো হয়ছে। শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ তথ্য…

    Continue reading

    আন্দোলনকারীদের রাজপথ না ছাড়ার আহ্বান হাসনাত আব্দুল্লাহর

    আন্দোলনকারীদের রাজপথ না ছাড়ার আহ্বান হাসনাত আব্দুল্লাহর

    জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে

    জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে

    নিষিদ্ধ হলো ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ

    নিষিদ্ধ হলো ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ

    কাশ্মীরে ফের বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা

    কাশ্মীরে ফের বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা