
জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা।।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় ঘারমোড়া বাজারের গরুর হাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না ঘটে, সেজন্য উপজেলা প্রশাসন তার নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার সকালে, যখন ঘারমোড়ার গরুর হাটে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতা, বিক্রেতা এবং স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘারমোড়ার গরুর হাটটি এক বছরের জন্য ইজারা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এই ইজারার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন হোমনা উপজেলার ঘারমোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শাহজাহান মোল্লা এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবু মুসা। অবশেষে ১ কোটি ১১ লাখ টাকায় ইজারা পান আবু মুসা। পরে হোমনা উপজেলার চেয়ারম্যান শাহজাহান মোল্লা ইজারা না পেয়ে আবু মুসার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তার লোকজন গরুর হাটে ভাংচুর চালায় এবং ক্যাশ বাক্স লুট করে নিয়ে যায়। এই হামলায় হোমনা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো: ফয়সাল, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো: জালাল, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের মো: মুকুল মেম্বার এবং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: মোসলেম আহত হন।
এ বিষয়ে গরুর হাটের ইজারাদার আবু মুসা থানায় মামলা দায়ের করেন। তিনি জানান, “গত ৩ মার্চ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে আমি ঘারমোড়া গরু বাজারের ডাক পেয়েছি। তবে ঘারমোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান মোল্লা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোকবল নিয়ে আমার কাছে বাজারের শেয়ার দাবি করেন। আমি শেয়ার দিতে অস্বীকৃতি জানালে, পরবর্তীতে তিনি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় তার লোকজন বাজার ভাংচুর করে এবং ক্যাশ থেকে ইজারার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এর পাশাপাশি আমার ছেলে ফয়সাল মিয়াকে কুপিয়ে জখম করে।”
এছাড়াও তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, শাহজাহান মোল্লার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এবং তাঁর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে সখ্যতা আছে। সরকারি খাল দখল করে দোকান ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান মোল্লা মুঠোফোনে জানান, “আমি তিন বারের মতো চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।”
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, “এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আশা করি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।”
সংঘর্ষের পর পুরো এলাকায় শংকাএ ঘটনায় পুরো হোমনা উপজেলা এবং ঘারমোড়া বাজারে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত রাখার জন্য প্রশাসন তাদের নজরদারি আরও জোরদার করেছে।