ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে আজ বুধবার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি তাঁদের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ভারতীয় কর্মকর্তারা গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাশিয়ার কাজান শহরে তিন দিনব্যাপী ব্রিকস সম্মেলনের সাইডলাইনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ব্রিকস সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।
গতকাল রাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিক্রম মিসরি বলেন, ‘ব্রিকস সম্মেলনের একফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।’
এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে সি চিন পিংয়ের ভারতের মহাবালিপুরাম শহর সফরকালে মোদির সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ মুখোমুখি আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছিল। ২০২২ সালে জি-২০ জোটের নেতাদের এক সম্মেলনের সাইডলাইনে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতে মিলিত হয়েছিলেন মোদি ও সি চিন পিং। ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গেও তাদের সাক্ষাৎ হয়।
এর কয়েক মাস পর ২০২০ সালে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। ওই বছরের জুনে ভারতের হিমালয় অঞ্চলের লাদাখ সীমান্তে দেশ দুটির সেনাবাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে ভারতের অন্তত ২০ জন এবং চীনের চারজন সেনাসদস্য নিহত হন। সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষ সীমান্ত থেকে হাজারো সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয় এবং সেখানে সেনাদের টহলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
তবে ভারত গত সোমবার বলেছে, সামরিক উত্তেজনা নিরসনে চীনের সঙ্গে দেশটির টহলসংক্রান্ত একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। চুক্তির অংশ হিসেবে ২০২০ সালের সংঘর্ষের আগে দুই দেশের সেনারা যেসব জায়গায় টহল দিতেন, সেখানে যেতে পারবেন। সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী দিনে সেনা প্রত্যাহারের পথ প্রশস্ত হবে।
লাদাখ সীমান্তে জটিলতা পুরোপুরি নিরসনের আগপর্যন্ত দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। গত চার বছরে ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে চীনের কোম্পানিগুলোর জন্য বিনিয়োগের পরিবেশ অনেক কঠিন করেছে নয়াদিল্লি। টিকটকসহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চীনের অনেক গেমিং ও ই–কমার্স অ্যাপ। এ ছাড়া কোয়াডভুক্ত দেশগুলো সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করেছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এ জোটের উদ্দেশ্য এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তার রুখে দেওয়া। পশ্চিম কোম্পানিগুলোর জন্য বিনিয়োগ এবং যৌথভাবে সামরিক সরঞ্জাম তৈরির শর্ত শিথিল করেছে ভারত।
তবে এখন নয়াদিল্লির সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং ভারতের দ্রুত বিকাশমান বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে জোর দিচ্ছে বেইজিং।