
পাঞ্জাব কিংসের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৪৫ রান। ডিফেন্ড করার মতোই পুঁজি। তবে নিজেদের দিনে এ রান টপকে ফেলা সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জন্য কঠিন কিছু না। গতকাল শনিবার সেটি আবারও প্রমাণ করলো অভিষেক শর্মারা।
পাঞ্জাবের বিশাল রানের লক্ষ্য ৮ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখেই টপকে গেছে হায়দরাবাদ। পাঞ্জাবের বোলারদের খড়কুটোর মতো উড়িয়ে অভিষেক-হেডরা।
উত্তেজনাপূর্ণ রান-উৎসবের ম্যাচের মাঝপথে দেখা গেছে দুই দলের ক্রিকেটারদের স্লেজিং ও ঠাট্টা-মশকরা। সেই স্লেজিং এক পর্যায়ে রূপ নিতে যাচ্ছিল ঝগড়ায়। যদিও অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটেনি শেষ পর্যন্ত। তবে থমথমে পরিস্থিতি তৈরি করে সবাইকে অবাক দিয়েছেন দুই অস্ট্রেলিয়ান হায়দরাবাদের ওপেনার ট্রাভিস হেড ও পাঞ্জাবের অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
হায়দরাবাদের ইনিংসের নবম ওভার করেন ম্যাক্সওয়েল। ওভার শেষে হায়দরাবাদের ব্যাটার স্বদেশী হেডের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন তিনি। এরপর তাদের সঙ্গে যোগ দেন পাঞ্চাবের আরেক অস্ট্রেলিয়ান মার্কাস স্টয়নিস। পরে আম্পায়ারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে বিষয়টিকে শেষ পর্যন্ত হালকা মেজাজের ঠাট্টা-মশকরা বলেই মনে হয়েছে।
ম্যাচ-পরবর্তী বক্তব্যে ম্যাক্সওয়েল ও স্টয়নিসের সঙ্গে সেই মুহূর্ত নিয়ে কথা বলেন হেড। বাঁহাতি মারকুটে ব্যাটার, ‘যখন আপনি কাউকে খুব ভালোভাবে চেনেন, তখন তার মধ্যে ভালো ও খারাপ—দুটোই বেরিয়ে আসে। সিরিয়াস কিছু ছিল না, একটু মজা-মশকরা মাত্র।’
এই ম্যাচে হেড তার ওপেনিং পার্টনার অভিষেক শর্মার এক ঐতিহাসিক ইনিংস দেখতে থাকেন অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে।
শনিবারের ম্যাচ আইপিএলের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এটি ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজির ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। শনিবার রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এই রেকর্ড গড়া জয়টি আসে অভিষেক শর্মার দুর্দান্ত ১৪১ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস ও ট্রাভিস হেডের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৬৬ রানের ইনিংসের মাধ্যমে।
চলতি মৌসুমে এই ম্যাচের আগে অভিষেক শর্মা কোনো ছক্কা মারেননি। কিন্তু গতকাল তিনি যেভাবে নিজের ইনিংস শুরু করেন, তা ছিল চোখ ধাঁধানো। মার্কো জানসেনকে টানা তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান, এরপর ইয়াশ ঠাকুরকে এক ছক্কা মারেন ও একটি নো-বলে আউট হলেও সেই ফ্রি হিটটি গ্যালারিতে পাঠান। পাঞ্জাবের বোলারদের প্রতি তিনি ছিলেন একেবারে নির্দয়।
অন্যদিকে হেড ছিলেন ঠান্ডা মাথায় খেলা একজন কৌশলী ব্যাটার। অভিষেকের আগুনকে সামঞ্জস্য করছিলেন বরফের মতো। অভিষেক যখন ছক্কা-চারে বোলারদের ওপর চড়াও হচ্ছিলেন, তখন হেড স্ট্রাইক ঘুরিয়ে, গ্যাপ খুঁজে সুযোগ পেয়ে বাউন্ডারিতে মেরে রান বাড়াচ্ছিলেন।
উদ্বোধনীতে ১৭১ রানের জুটি করেন হেড ও অভিষেক। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন হেড। ৫৫ বলে ১৪১ রান করে থামেন অভিষেক।