
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নাম মৌসুমী। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা, জিতেছেন জাতীয় পুরস্কারসহ অগণিত সম্মাননা। কিন্তু সময়ের পালাবদলে আজ তিনি নিজেকে ভুলে যেতে চাইছেন, ফিরতে চাচ্ছেন না সিনেমায়—এমনই তথ্য দিয়েছেন তার স্বামী ও অভিনেতা ওমর সানি।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে অবস্থান করছেন মৌসুমী। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশ ছাড়েন তিনি। সঙ্গে আছেন মেয়ে ফাইজা ও অসুস্থ মা। এই মুহূর্তে দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এক সাক্ষাৎকারে ওমর সানি জানান, ‘মৌসুমী এখনই ফিরছেন না। মেয়ের পড়াশোনা ও শাশুড়ির অসুস্থতা মিলিয়ে ওর এখন পরিবারকেই সময় দেওয়া জরুরি।’
তবে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ছিল সানির মুখে মৌসুমীর একটি উক্তি— ‘সানি, আমি ভুলে যেতে চাই আমি মৌসুমী ছিলাম।’
সানি বলেন, ‘এই কথাটা খুব কষ্টের। তার মত একটা লিজেন্ড নিয়ে ভালো কাজ তৈরি করবে এমন ভাবনা তো কারো নেই।”
নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের আচরণ নিয়েও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সানি। তার ভাষায়, ‘নতুনদের সৌজন্যবোধে ঘাটতি আছে। অনেকেই এখন মনে করেন, তারা মৌসুমীর চেয়েও বড় তারকা হয়ে গেছেন।’
অভিনয়ের বাইরে গায়িকা ও পরিচালক হিসেবেও মৌসুমী ছিলেন সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন আয়োজনে এখনো পারফর্ম করছেন তিনি। ২৭ এপ্রিল নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড অ্যান্ড ফেস্টিভ্যালে’ মঞ্চে গান গেয়েছেন এই চিত্রতারকা।
১৯৯৩ সালে সালমান শাহর বিপরীতে কেয়ামত থেকে কেয়ামত দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক মৌসুমীর। এরপর একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন ওমর সানিও। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাদের অভিনীত সোনার চর।
এদিকে ওমর সানি এখন রিয়েল এস্টেট ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও জানিয়েছেন, অভিনয় থেকে একেবারে সরে যাননি। তার ভাষায়, ‘কাজের প্রস্তাব আসে, তবে সব চরিত্র আমার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই হয় না বলে করি না।’
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, সামনে একটি নতুন সিনেমায় আবারও দেখা যেতে পারে ওমর সানিকে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ২ আগস্ট ভালোবেসে বিয়ে করেন মৌসুমী ও ওমর সানি। তাদের প্রথম সিনেমা ছিল ‘দোলা’, এরপর একসঙ্গে কাজ করেছেন ‘প্রিয় তুমি’, ‘মুক্তির সংগ্রাম’, ‘সুখের স্বর্গ’, ‘মিথ্যা অহংকার’, ‘ঘাত প্রতিঘাত’ সহ বহু ছবিতে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের রোজার ঈদে মুক্তি পায় তাদের অভিনীত ‘সোনার চর’ সিনেমা।