
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বাংলাদেশি আমেরিকানদের জন্য ই-পাসপোর্ট, এনভিআর ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সেবা দিতে কনস্যুলার সেবার ব্যবস্থা করেন দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসির কর্মকর্তারা। ৩১ মে ও ১ জুন দুই দিনব্যাপী চলে এই সেবা।
মিশিগানে লাখের বেশি মানুষের বাসস্থান হলেও এখানে নেই কোনো স্থায়ী কনস্যুলার অফিস। বছরে সাময়িক সময়ের জন্য দূতাবাস কর্তৃপক্ষ সেবা দিলেও বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই। ২০০৩ সাল থেকে আশার বাণী শোনালেও এখন পর্যন্ত মেলেনি কোনো দূতাবাসের স্থায়ী অফিস।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব মিশিগানের সার্বিক সহযোগিতায় দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি গত এপ্রিল মাসের ১২-১৪ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী কনস্যুলার সেবা দেন দূতাবাসে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং স্বেচ্ছাসেবীরা। মানুষের চাহিদা থাকায় দেড় মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো দুই দিনব্যাপী আবারো কনস্যুলার সেবা দেওয়া হয়।
সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় প্রথম দিনে দেখা যায়, সেবা নিতে জড়ো হন কয়েক শত সেবা গ্রহীতা। মিশিগানে বসবাসরতদের পাশাপাশি পাশের রাজ্যগুলো থেকেও ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন বাংলাদেশিরা।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও ই-পাসপোর্টের আবেদন বেশি থাকায় রাত পর্যন্ত সেবা দিতে হয় দূতাবাস কর্মকর্তাদের। তবে এবার আবেদনকারীদের মধ্যে লাইনে দাঁড়ানো ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে টোকেন সিস্টেমে অনেকটা গতিশীল ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর বসবাস হলে যতই সময় যাচ্ছে অভিবাসীর সংখ্যা ততই বেড়েই চলেছে। এমআরপি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অতিরিক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দূতাবাসের কর্মকর্তারা রাত ১১টা পর্যন্ত সেবা দিয়েছে।
দুর্ভোগ ও একটি ই-পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে সেবা পাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য। তাই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মিশিগানে দূতাবাসের স্থায়ী অফিস স্থাপনে দাবি জানিয়েছেন আগত সেবা গ্রহীতারা।
বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসির ডিপুটি চিফ অব মিশন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, দুইদিনে মোট ৭১১টি আবেদনের সেবা প্রদান করেন যার মধ্যে ই-পাসপোর্ট ৩৩৮টি, নো-ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর)- ৩৬২টি এবং পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি ১১টি।
এই সেবা প্রদানে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মিশিগানের সব স্বেচ্ছাসেবীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দেওয়ান আকমল চৌধুরী, সেলিম আহমদ, শাহাদাত হোসেন মিন্টু, মোস্তফা কামাল, নুরুল আলম সিদ্দীকী খালেদ, কাজী এবাদ, সাব্বির আহমদ ও সাইফ ইসলামসহ অনেকেই।
গত এপ্রিল মাসের কনস্যুলার সেবায় মোট ১৮৬০টি আবেদন সম্পন্ন করা হয়েছিল, যার মধ্যে ই পাসপোর্ট হচ্ছে ৬৩৮টি এবং পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও এনভিআর হচ্ছে ১২২২টি।
সেবা নিতে আসা সবাই প্রত্যাশা করেন, দ্রুত বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শিগগিরই মিশিগানে স্থায়ী অফিস স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।