ইসরায়েল এবং লেবাননের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থির হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে আরও সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আল জাজিরার।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এক ঘোষণায় জানিয়েছে, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ২০ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ইসরায়েল এবং লেবাননের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জনে। তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৬৪৫ জন। নিহতদের মধ্যে ২৪ জন শিশু, ৩৯ জন নারী ও দুজন প্যারামেডিক সদস্য রয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েক দফায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে হিজবুল্লাহ লেবাননে যত অবকাঠামো তৈরি করেছিল, তা ধ্বংসের অভিযানে নেমেছে ইসরায়েল।
দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এরই মধ্যে হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হিজবুল্লাহ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগে আছে গোষ্ঠীটির। তবে এর উল্লম্ফণ ঘটেছে গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে। ওই হামলার পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েরের উত্তরাঞ্চলে রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলও সমান তালে হামলা অব্যাহত রাখে।
গত সপ্তাহে লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের এই ঘটনায় লেবাননে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের মধ্যে হিজবুল্লাহর অন্তত ১৬ সদস্য রয়েছেন। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে দায়ী করছে হিজবুল্লাহ।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটির যোগাযোগের যন্ত্রে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাঝেই সোমবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় একাধিক শহরে একযোগে বিমান হামলার ঘটনা ঘটলো।