
হাবিবুর রহমান মুন্না।।
বাংলাদেশে এনসিপি ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘যে আওয়ামী লীগকে ছাত্র-নাগরিক রাস্তায় তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছে, আজ সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
বুধবার (১৯ মার্চ) কুমিল্লার শাসনগাছায় ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ ২৪-এর শহীদ ও আহত গাজীদের স্মরণে আয়োজিত গণইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনী সুবিধা আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কূটনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন। বিদেশে বসেও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আমরা সতর্ক করে দিতে চাই, এই ছাত্র-নাগরিকের হারানোর কিছুই নেই। এক খাপে দুই তলোয়ার যেমন থাকতে পারে না, ঠিক তেমনই ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং এনসিপি একসঙ্গে থাকতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, তাহলে ৫ আগস্ট গণভবন ও বঙ্গভবনের যে পরিণতি হয়েছে, তাদেরও একই পরিণতি হবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ গত তিনটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এসব নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দিয়েছে প্রশাসন, নির্বাচনও পরিচালনা করেছে প্রশাসন। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের কোনো দক্ষতা আওয়ামী প্রশাসনের নেই। এই প্রশাসন সংস্কার না করা পর্যন্ত, আমরা যতক্ষণ না নিশ্চিত হব যে এই প্রশাসন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে, ততক্ষণ আমরা আশ্বস্ত হব না। এ জন্য আমরা চাই, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে এই প্রশাসনের স্বচ্ছতার পরীক্ষা হোক।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিন। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে যতগুলো উপজেলা রয়েছে, সেগুলো ৫-৬টি ধাপে নির্বাচন দিয়ে এই প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন।’
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব রিফাত রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জাহিলিয়াতের যুগে আন্দোলনের সময় আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলছিল, ‘আংকেল গেটটা একটু খোলেন’, তখন গেটটা কেউ খোলেনি। আমরা এই আওয়ামী লীগকে কুমিল্লা থেকে উৎখাত করেছি। শেখ হাসিনার দুঃস্বপ্ন ছিল এই কুমিল্লা। এই কুমিল্লাতেই আমরা আওয়ামী লীগকে কবরস্থ করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দেড় দশক ধরে কুমিল্লাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। যখনই কুমিল্লা নিয়ে কোনো কথা উঠেছে, এই ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার কুমিল্লাকে উপহাস করেছে। আগামীতে কুমিল্লার যতগুলো আসন রয়েছে, এনসিপির নেতৃত্বে আমরা সেখানে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলব।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বাজার দখল, পুকুর দখল ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এলাকায় শুরু হয়ে গেছে। যারা দখলবাজ, তাদের হাত গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিন। দেবীদ্বার ও কুমিল্লার মাটিতে কোনো ধরনের চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না। কেউ যদি চাঁদা তুলতে আসে, বলবেন চাঁদার টাকা হাসনাত আবদুল্লাহকে দিয়ে আসছি। তার কাছ থেকে চাঁদার টাকা নিয়ে আসুন।’