দীর্ঘ টানাপোড়েন, উৎকণ্ঠার পর অবশেষে সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৮ আগষ্ট) বাংলাদেশে অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এদিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের আচ পড়েছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও। বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ছাত্রদের সমর্থন জানিয়ে কলকাতার রাজপথে বিক্ষোভ-মিছিল হয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের সব নাগরিকই অপেক্ষায় বসেছিলেন বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব কার হাতে যায় তা দেখার জন্য।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পাওয়ার পরই নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পবিত্র সরকার ছাড়াও কলকাতার নিউমার্কেট চত্বরের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মনোতোষ সরকার।
শুক্রবার (৯ আগষ্ট) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসসহ যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাদের প্রতি আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা রইল। আশা করি তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নতি, শান্তি, প্রগতি এবং সর্বস্তরের মানুষের আরও ভালো হোক এই কামনা করি। সেখানকার ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক, নারী থেকে শুরু করে সকলের প্রতি আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আশাব্যক্ত করে বলেন, আশা করি খুব শিগগির সংকট কেটে যাবে, শান্তি ফিরে আসবে। শান্তি ফিরে আসুক তোমার-আমার ভালোবাসার ভুবনে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকবো।
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার বঙ্গভবনে শপথ নেওয়ার পরেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পূর্ব-পরিচিত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পবিত্র সরকার তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ১৯৭২ সালে শিকাগোতে আমরা একসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের জন্য কাজ করেছি। কিন্তু সেই ইউনূস এখন কি আগের মতো আছেন? তিনি আমার পরিচিত বলে জ্ঞান করবে কিনা আমার জানা নেই। তবে আমি তাকে যতটা জানি, খুব ঠাণ্ডা মাথার লোক এবং ভদ্র, সজ্জন তিনি।
অধ্যাপক পবিত্র সরকার আরও বলেন, এ ধরনের ঠাণ্ডা মাথার ভদ্র, সজ্জন ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছেন। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী তাকে কতটা সাহায্য করবে। পুলিশ বাহিনীর মনোবল ইতোমধ্যেই ভেঙে গেছে। যে সব রাজনৈতিক দল ওখানে আছে সেসব দলকে তিনি কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তার ওপর নির্ভর করছে তার সাফল্য। তাকে সবার কথা শুনতে হবে। তাদের মেজাজ, বুদ্ধি, মতামত অন্য দেশ তথা ভারতের সম্পর্কে তাদের মতামত এ সম্পর্কে তাকে অবশ্যই প্রভাবিত করবে এবং তাকে নিয়ন্ত্রন করবে।
আমি তার সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা জানাই। কিন্তু তার সাফল্য কতটা হস্তগত হবে সে সম্বন্ধে আমার একটু সন্দেহ আছে।
বাংলাদেশের আন্দোলনরত ছাত্রদের প্রতি আশাব্যক্ত করে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার জানান, এসব থামুক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। ছাত্ররা এগিয়ে আসুক। ছাত্রদের প্রতি একটা আশা আছে। ছাত্রদের মধ্যে অনেক শুভ বুদ্ধি সম্পূর্ণ ছেলে-মেয়েরা আছে। তারা যদি আসে এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস চেষ্টা করেন তাহলে বাংলাদেশ উন্নতির পথে চলবে এটা আমরা আশা করি।