মারা গেছেন অগ্নিকন্যাখ্যাত মতিয়া চৌধুরী। বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
এভারকেয়ার হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হলে সকালে মতিয়া চৌধুরীকে হাসপাতালে আনা হয়। এরপরই আমরা ইসিজি করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করি। শেষ পর্যন্ত আমরা সব ধরনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সফল হতে পারিনি। দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থি রাজনীতি দিয়ে। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সদস্য ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। তিনি ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ বিলুপ্তের মাধ্যমে সংসদ সদস্য পদ হারান।
মতিয়া চৌধুরী ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭০ ও ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, তদবির এবং আহতদের শুশ্রুষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়কালে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন।
১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন।