কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে গত তিন দিনে ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এতে জেলার দৌলতপুর উপজেলায় নদীর আশপাশের নিম্নাঞ্চলে ফসলি জমি ডুবে গেছে। উপজেলার চার ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৭টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ফসলি জমি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে আছে চরবাসী।
চারপাশে পানি ওঠায় ইতিমধ্যে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে কমতে শুরু করে। তবে এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি হু হু করে বাড়ছে। গত তিন দিনে ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, পদ্মার পানি আবারও বাড়ছে। আরও কয়েক দিন বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। যেটুকু পানি বেড়েছে, তাতে চরাঞ্চল নিমজ্জিত হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের মানচিত্রের তথ্যমতে, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে গত রোববার বেলা তিনটায় পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৯৮ মিটার। সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে হয় ১২ দশমিক ১৫ মিটার। মঙ্গলবার একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার, যা বুধবার আরও ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বেলা তিনটায় পানির উচ্চতা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটারে। পদ্মায় সেখানে বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এখনো পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, ইউনিয়নের ২১ গ্রামেই ফসলি জমি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। দু–তিনটি গ্রামে কয়েকটি বাড়ির ভেতরেও পানি প্রবেশ করেছে। আরও পানি বাড়লে কয়েকটি বাড়ির উঠান পানিতে তলিয়ে যাবে। চরের আবাদি জমি সব ডুবে গেছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। অন্তত চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি থাকায় শিক্ষার্থীরা আসছে না। এতে স্কুলগুলোতে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যার পানির সার্বিক বিষয়ে প্রতিদিন উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হচ্ছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে। ফসলি জমি ডুবে গেলেও কোনো বাড়িতে পানি প্রবেশ করেনি।