‘টারজান’খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা রন এলি মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় এই অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।বুধবার (২৩ অক্টোবর) তার মেয়ে ক্রিশ্চেন কাসালে এলি সামাজিকমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্টের মাধ্যমে তার বাবার মৃত্যুর খবর জানান।
রনের মেয়ে ক্রিশ্চেন কাসালে এলি ইনস্টাগ্রামে এই অভিনেতার মৃত্যুর ঘোষণা দিয়ে লেখেন, আমার বাবা ছিলেন এমন একজন, যাকে মানুষ হিরো বলত। তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেতা, লেখক, প্রশিক্ষক, মেন্টর, পরিবার অন্তঃপ্রাণ মানুষ এবং নেতা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারায় লস আলামোসে নিজ বাড়িতে মারা যান রন এলি। তার মৃত্যুর প্রায় একমাস পর পরিবারের পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করা হলো।
বিশ শতকের বেশ কিছু জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ও সিনেমায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা রন এলি। তবে টারজান চরিত্রটি তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে।
রন এলির জন্ম ১৯৩৮ সালে, টেক্সাসে। ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে সিটকম ‘ফাদার নোজ বেস্ট’, ‘হাউ টু ম্যারি আ মিলিয়নেয়ার’ ও ‘দ্য মেনি লাভস অব ডোবি গিলিস’-এর মতো জনপ্রিয় টিভি শোগুলোতে অভিনয় করেন রন। এরপর ১৯৬৬ সালে ‘টারজান’-এ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান এই অভিনেতা।
দর্শকের কাছে রন মূলত টারজান নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত এনবিসি টেলিভিশনে দুই সিজনের টারজানের ৫৭টি এপিসোড সম্প্রচারিত হয়। এতে আধুনিক দর্শকদের জন্য এক নতুন টারজান চরিত্রকে তুলে ধরা হয়। সে সময় রন এলি তার প্রায় সব স্টান্ট নিজেই করতেন। তা করতে গিয়ে দুবার তার কাঁধের হাড় ভেঙেছে, পিঠের পেশি ছিঁড়েছে, এবং দুবার সিংহের কামড় খেয়েছেন। আর এইসব তার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দেয়। টারজান সিরিজটি জনপ্রিয়তার জন্যই পরে বিভিন্ন ভাষায় ডাবিং করে বিশ্বের নানা দেশে সিরিজটি প্রচারিত হয়েছিল।
টারজান এলিকে বিশ্বের সবার কাছে নিয়ে গিয়েছিল। রন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই চরিত্রটি এমন একটি ফাঁদ, যেখান থেকে কেউই মুক্তি পায় না। এই চরিত্রের সঙ্গে তিনি এতটাই মিশে গিয়েছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রে তার অন্য চরিত্রে কাজ পেতে সমস্যা হয়ে যায়। এ কারণে তিনি কাজের জন্য ইউরোপে চলে যান। ১৯৭৫ সালে এলি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আরেকটি জনপ্রিয় চরিত্র ‘ডক স্যাভেজ: দ্য ম্যান অব ব্রোঞ্জ’-এ নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর তিনি আবার টেলিভিশনে ফিরে যান। দীর্ঘবছর এই অভিনেতা টেলিভিশনের একাধিক জনপ্রিয় সিরিজে অভিনয় করেন।