
পবিত্র ঈদুল আজহা ৭ জুন। আজ থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢল নেমেছে ঘরমুখী মানুষের।
কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীতে তিন স্তরের টিকিট চেকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্টেশনে প্রবেশ করছেন দূরপাল্লার সাধারণ যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (৫জুন) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশনে প্রবেশের জন্য বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে লাইন তৈরি করা হয়েছে। বিনা টিকিটের যাত্রীরা টিকিট প্রদর্শন না করে প্রথম ধাপ পার হতে পারছেন না। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আবারও টিকিট যাচাই করা হচ্ছে। সবশেষ প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগে পুনরায় টিকিট প্রদর্শন করে যাত্রীদের প্রবেশ করতে হচ্ছে।
এছাড়া চুরি-ছিনতাইসহ যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।
নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঈদযাত্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, সিডিউল বিপর্যয় না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন যাত্রীরা।
পঞ্চগড়গামী ট্রেনের যাত্রী সাগর বলেন, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। ঈদে বাড়িতে যাওয়ার যে আনন্দ সেই আনন্দের যাত্রায় যাতে ট্রেন মিস না হয় সেই জন্য ২ ঘণ্টা আগে থেকেই ট্রেনের অপেক্ষায় বসে আছি।
সিরাজগঞ্জগামী ট্রেনের যাত্রী মিজানুর রহমান বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, আগে থেকে টিকিট কাটতে পারিনি তাই স্টেশনে এসে স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করেছি। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাবো না এটা কি হয়। তাই কষ্ট করে হলেও বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি যখন ঠিকই বাড়িতে পৌঁছে যাবো।
রংপুর এক্সপ্রেসে পরিবার নিয়ে শান্তাহার যাচ্ছেন রুস্তম। তিনি বলেন, অনেকদিন পরে বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাবো, এটাই অনেক আনন্দের।
টিকিট পেতে সমস্যা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল অনলাইনের মাদ্যমে টিকিট কেটেছি। সার্ভারে কিছুটা সমস্যা ছিল। তবে টিকিট পেয়ে খুশি। আশা ছিল না টিকিট পাবো। কিন্তু পেয়েছি, এটাই কপাল।
একতা এক্সপ্রেসে পরিবার নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদী যাচ্ছেন মো.মিঠু। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ঈদ না করলে ঈদের আনন্দটা উপভোগ হয় না। ঈদের ছুটিতে কষ্ট করে বাড়িতে গেলেও পরিবারের মানুষগুলোর কাছে পৌঁছালেই ঈদের আনন্দ দ্বিগুন হয়ে যায়।
এদিকে, সকাল থেকে ছেড়ে যাওয়া কোন ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়ের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন অনেকে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব করে ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। তিন স্তরের টিকিট চেকিং ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত স্বস্তির।
সকাল থেকে ১৫টি ট্রেন নির্ধারিত গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। সারাদিনে ৬৩টি ট্রেন ঢাকা ছেড়ে যাবে এবং এখন পর্যন্ত কোন ট্রেন সিডিউল বিপর্যয় নেই বলেও জানান তিনি।