ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে পৌঁছাতে পেরেছে। গতকাল রোববার ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এর জন্য ইরান-সমর্থিত হুতিদের চড়া মূল্য দিতে হবে।
হুতি বিদ্রোহীদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া বলেন, তাদের ছোড়া যে ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে পৌঁছে সেটি নতুন একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ২ হাজার ৪০ কিলোমিটার দূরত্বের ওই লক্ষ্যে পৌঁছাতে ক্ষেপণাস্ত্রটির সময় লেগেছে মাত্র সাড়ে ১১ মিনিট।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে আকাশেই ক্ষেপণাস্ত্রটি টুকরা টুকরা করে দেওয়া হয়েছে। তবে এটি পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়নি।
ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটের দিকে তেল আবিব ও ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে বিমান হামলাজনিত সতর্কসংকেত বেজে ওঠে। সেখানকার বাসিন্দারা তখন দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। বিকট শব্দ শোনা গিয়েছিল।
ক্ষেপণাস্ত্রটির টুকরা টুকরা অংশগুলো জমি ও পাশের একটি রেলস্টেশন পড়েছে। এ ঘটনায় সরাসরি কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে তড়িঘড়ি করে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় ৯ জন হালকা আঘাত পেয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদকর্মীরা ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের একটি খোলা মাঠ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেছেন।
মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হুতিদের বোঝা উচিত ছিল যে ইসরায়েলের ওপর হামলা হলে দেশটি চড়া মূল্য আদায় করে নিতে পারে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বারবারই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে বলে দাবি সশস্ত্র গোষ্ঠীটির।
গত জুলাই মাসে প্রথমবার তেল আবিবে ড্রোন হামলা চালায় হুতিরা। ওই হামলায় এক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন চারজন। এর জবাবে ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দরের কাছে হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ছয়জন নিহত হন। আহত হন ৮০ জন।
এর আগে কখনো হুতিদের ছোড়া কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি আকাশসীমার এতটা গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়নি।
হুতিদের সামরিক শাখার মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া বলেন, ৭ অক্টোবর যুদ্ধের (গাজা যুদ্ধ) এক বছরপূর্তি এবং হোদেইদাহ বন্দরে হামলার জবাবে ভবিষ্যতে আরও হামলার আশঙ্কা করতে পারে ইসরায়েল।
হুতির গণমাধ্যম কার্যালয়ের উপপ্রধান নাসরুদ্দিন আমের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) গতকাল একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার পর একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েল পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এটিকে ‘সূচনাপর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।