বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গত জুলাইয়ে আমিরাতে বিক্ষোভ করায় আটক হন বহু প্রবাসী। তাদের মধ্যে ১১৪ জন সাধারণ ক্ষমা পেয়ে দেশে ফিরলেও দেশটির কারাগারে এখনও আটকা আছেন অর্ধশতাধিক প্রবাসী। ধীর গতির কূটনৈতিক তৎপরতায় তাদের মুক্তির বিষয়ে আশার আলো দেখছেন না বলে অভিযোগ প্রবাসীদের।
বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখির কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় দুই মাস কারাবন্দী ছিলেন হাফেজ মোহাম্মদ। দেশে ফিরেছেন গেল মাসে। এখনোও প্রেস ক্লাবসহ সচিবালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আমিরাতের জেলে আটক অর্ধশতাধিক প্রবাসীকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে।
হাফেজ মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রায় শতাধিক প্রবাসী এখনো কারাগারে আছেন। তাদের মুক্তির জন্যআমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারক দিয়েছি। সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, যারা এখনো আটকা আছেন তাদের মুক্তির জন্য ব্যবস্থা করা হয়।’
এদিকে খালেদ সাইফুল্লাহ নামে আটক এক প্রবাসীর স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে মুক্ত করতে উদ্যোগী হয় বাংলাদেশ। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসে গত ২৮ অক্টোবর খালেদ সাইফুল্লাহর মুক্তির ব্যবস্থা করতে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আমিরাতের জেলে আটক প্রবাসীদের পরিবারের দিন কাটছে চরম অনিশ্চয়তায়। আটককৃতদের দেশে ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আবেদন পরিবারগুলোর।
আটক খালেদ সাইফুল্লাহর স্ত্রী বলেন, তিন মাসের বেশি হয়ে গেছে। আমরা এখনো অনিশ্চয়তা নিয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমার স্বামীকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সরকারের দ্রুত সহযোগিতা চাচ্ছি।
এদিকে আন্দোলনে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটককৃতদের বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
আবুধাবি দূতাবাসের মিনিস্টার মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘প্রত্যেকটা দেশের নির্দিষ্ট আইন কানুন আছে, সেগুলো মেনে, সেগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাদের কাজ করতে হয়। সেই আইন-কানুনগুলো মেনে আমাদের যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সেগুলো চালিয়ে যাচ্ছি।’
ধারণা করা হচ্ছে আমিরাতের জেলে এখনও আটক আছেন সত্তর জনের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। সময় সংবাদের হাতে আসা তালিকায় তাদের বেশ কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংহতি জানানো অর্ধ শতাধিক বাংলাদেশি এখনো আটক রয়েছেন দেশটির বিভিন্ন জেলে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ধীরগতির কূটনৈতিক তৎপরতায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে আটককৃতদের ভাগ্য। সঠিক করে কেউই বলতে পারছেন না কখন মিলবে তাদের মুক্তি।