রক্তচক্ষু নিয়ে হাজির হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’। এরমধ্যেই ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের কাছে পৌঁছাবে ‘ডানা’। বুধবার (২৩ অক্টোবর) থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে শুরু করবে। তবে ঝড়টি কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ভারতের আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে ঝড়। ফলে সমুদ্র হবে উত্তাল। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার গতিবেগও ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। তাই আবারও ঝড়ের প্রভাবে সব তছনছ হয়ে যেতে পারে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাত কাটাচ্ছেন উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আতঙ্কে ত্রস্ত সুন্দরবনের উপকূল এলাকা। সোমবার (২১ অক্টোবর) থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে সব মৎস্য আহরণকারী ট্রলারকে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ঝড়ের প্রভাবে একটানা তিনদিন ভারি বৃষ্টি হতে পারে- পূর্বাভাসে এমনটাই বলা হয়েছে। বাড়তে পারে সমুদ্র ও নদীর পানির স্তরও।
পশ্চিমবঙ্গ সুন্দরবন উপকূলে বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে উপকূলবর্তী সাগর, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, বকখালি, পাথরপ্রতিমা ও রায়দিঘি এলাকায় মাইক নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এরইমধ্যে কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা ও নামখানা ব্লকে সাইক্লোন সেন্টার খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে বাঁধের কাছে বসবাসকারী বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে উচুঁ এলাকা বা সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কাকদ্বীপ মহকুমা শাসকের দফতরে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিভিল ডিফেন্স, এসডিআরএফ এবং এনডিআরএফ-কে সতর্ক করে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে সুন্দরবনের উপকূল এলাকায় জরুরিভিত্তিতে মোতায়েন করা হতে পারে ওই বিশেষ বাহিনী।
ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সেচ দফতরের কর্মীরা বাঁধের ওপর নজরদারি চালাবে। বাঁধের কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত মেরামত করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত এবং ব্লক অফিসগুলোতে শুকনো খাবার, পানি এবং ত্রিপল মজুত করা হচ্ছে।
উপকূল এলাকায় নজরদারি চালাতে বিডিও অফিসগুলোতেও একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।