তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২ উইকেটে হেরে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে অসিদের ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ১-১ সমতায় ফেরে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। আজ রোববার সিরিজ নির্ধারণী ‘ফাইনাল’ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজও নিজেদের করে নেয় পাকিস্তান।
পার্থ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩১.৫ ওভার ব্যাট করে ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটিই অসিদের দলীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২৬.৫ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। এতে ২-১ ব্যবধানে নিশ্চিত হয় সফরকারীদের।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২২ বছর এই প্রথম কোনো সিরিজ জিতলো পাকিস্তান। এর আগে ২০০২ সালে সর্বশেষ অসিদের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠে সিরিজ জিতেছিল পাকিস্তান। সেটিও ছিল ওয়ানডে সিরিজ। ব্যবধানও ছিল ২-১।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে টেস্ট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে আসে পাকিস্তান। ওই সিরিজে ছিল পাকিস্তানের স্পিনারদের দাপট। শেষ দুই টেস্টের ৪০টি উইকেটই দখল করেছিলেন স্পিনাররা।
অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে পুরোপুরি বিপরীত চিত্র। মেলবোর্ন, অ্যাডিলেইড ও পার্থে দাপট দেখিয়েছেন চার পেসার- শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও হারিস রউফ। এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার পতিত ২৬টি উইকেটই পেয়েছেন পেসাররা; পাকিস্তানের হয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে যা সর্বোচ্চ।
অসিদের বিপক্ষে এই সিরিজে পাকিস্তানের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছেন হারিস রউফ। ডানহাতি এই গতিতারকা নিজে একাই নিয়েছেন ১০ উইকেট। বাঁহাতি শাহিন শাহ আফ্রিদির দখলে আছে ৮ উইকেট। আরেক ডানহাতি নাসিম শাহ শিকার করেছেন ৫টি ও মোহাম্মদ হাসনাইন নিজের থলিতে জমা করেছেন ৩ উইকেট।
পার্থে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান পেসারের তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। আফ্রিদি, নাসিম, হাসনাইন ও রউফের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারায় অসিরা।
ওপেনার ম্যাথিউ শটের ২২ আর তিনে নামা অ্যারন হার্ডির ১২ রান ছাড়া বাকিদের টপঅর্ডারদের বাকিরা ২ অংক ছুঁতে পারেননি।
অষ্টম উইকেটে অ্যাডাম জাম্পাকে সঙ্গে ৩০ রানের জুটি করে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১০০ পার করেন শন অ্যাবট। ২২ বলে ১৩ রান করে জাম্পা আউট হন নাসিমের বলে।
নবম উইকেটে স্পেন্সার জনসনকে নিয়ে ২২ রানের জুটি করে অস্ট্রেলিয়ার প্রাথমিক মান বাঁচান অ্যাবট। ৪১ বলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন ডানহাতি অসি ব্যাটার। স্পেন্সার আউট হন ১২ রানে। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস থেমে যায় ১৪০ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৮৪ রান করেন দুই পাকিস্তান ওপেনার সাইম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক। ৫৩ বলে ৩৭ রান করে অসি পেসার ল্যান্স মরিসের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে শফিক আউট হন। ওই ওভারেই দলীয় ১ রান যোগ করতেই বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথে হাঁটেন আইয়ুবও (৫২ বলে ৪২)।
বাকি কাজ করেন বাবর আজম ও রিজওয়ান। ৫৩ বলে ৫৮ রানের অপরাজিত জুটি করে দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন দুই ডানহাতি। বাবর ৩০ বলে ২৮ আর রিজওয়ান অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৩০ রান করে।
পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ। ২৪ রান খরচায় অসি ওপেনার ম্যাথিউ শট ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন হারিস রউফ।