
মালয়েশিয়ায় অনলাইনে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ৪৬ অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। গ্রেফতারদের মধ্যে বাংলাদেশিও রয়েছেন। তবে কতজন বাংলাদেশি গ্রেফতার হয়েছেন তা জানা যায়নি।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ (জেআইএম) বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কুয়ালালামপুরের কুচাই লামার বিলাসবহুল আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জেআইএম এর উপ-মহাপরিচালক (অপারেশনস) জাফরি এমবক তাহা বলেন, বুধবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে অভিযানে চীন, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, লাওস ও থাইল্যান্ডের ৪৬ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বয়স ২৩ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে।
ইমিগ্রেশন বিভাগ বলছে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে জনসাধারণের এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে দেখা গেছে, একটি সিন্ডিকেট কল সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য অফিস স্পেস ভাড়া করে। এই কল সেন্টারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের সোনা, সম্পত্তি, বিলাসবহুল জাহাজ, স্টক বিনিয়োগ এবং বিদেশি মুদ্রা কেনার প্রস্তাব দিয়ে প্রতারণা করা হতো। তারা কেবল স্থানীয়দেরই লক্ষ্য করেনি, বরং বিদেশের, বিশেষ করে তাদের নিজস্ব দেশ থেকে আসা গ্রাহক বা ভুক্তভোগীদেরও মধ্যে কার্যক্রম চালায়।
জাফরি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় তিন মাস ধরে এই সিন্ডিকেট কাজ করছে। তারা ফেসবুক, টিকটক, উইচ্যাট, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং অন্যান্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের খুঁজে বের করে।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেটটি একটি ফোন নম্বরের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং ভুক্তভোগীরা যখন আগ্রহ দেখাতে শুরু করে তখন তাদের প্রশাসকের সঙ্গে সংযুক্ত একটি লিংক পাঠিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের দেওয়া অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা স্থানান্তর করতে বলে।
এছাড়া চক্রটি, অনলাইন জুয়া পরিষেবা এবং প্রেমের ফাঁদে ফেলেও প্রতারণা করে বলে জানান তিনি।
জাফরি এমবক তাহা আরও বলেন, প্রতারক চক্রটি প্রতিদিন আনুমানিক ১ লাখ রিঙ্গিত থেকে দেড় লাখ রিঙ্গিত আয় করতো। চক্রের সদস্যরা প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ রিঙ্গিত মজুরি পেতেন।
এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযানে সময় দুটি সার্ভার র্যাক, চারটি ল্যাপটপ, ৮৮টি মোবাইল ফোন, তিনটি রাউটার, চারটি মডেম, ২৬টি সিমকার্ড এবং নগদ ১ লাখ রিঙ্গিতসহ বেশ কয়েকটি সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অভিযানে গ্রেফতারদের বৈধ পাস ছাড়া মালয়েশিয়ায় প্রবেশ, পাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করা এবং সামাজিক পরিদর্শন পাসের শর্ত লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অপরাধে ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ৫১(৫)(খ) ধারার অধীনে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।